কলকাতা , ৭ জানুয়ারি:- রাজ্য সরকার প্রথম দফায় সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের পাশাপাশি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন এমন চিকিৎসকদেরও কোভিড টিকাকরণ এর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ধরনের চিকিৎসকদের আগামী তিন দিনের মধ্যে নাম নথিভূক্ত করতে বলা হয়েছে। সরাসরি স্বাস্থ্য দপ্তরে নাম পাঠানো ছাড়াও কো উইন অ্যাপ ডাউনলোড করে অথবা রাজ্য চিকিৎসক সংগঠনের মাধ্যমে তারা নিজেদের নাম নথিভূক্ত করতে পারবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আগামী সপ্তাহ থেকেই দেশজুড়ে টিকাকরনের কাজ শুরু হতে পারে। প্রথম দফায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, সাফাই কর্মীর মত প্রথম সারির কোভিড যোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হবে। শুক্রবার সারা দেশের সঙ্গে রাজ্যজুড়ে করোনার টিকাকরণ-প্রক্রিয়ার মহড়া বা ড্রাই রান করা হবে। স্বাস্থ্য দপ্তর সুত্রে জানা গিয়েছে জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে এরাজ্যে ভ্যাকসিন আসতে পারে। তাই জেলা গুলিকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলকাতা-সহ দেশের ৪ জায়গায় ভ্যাকসিন মজুত করার জন্য বড় কেন্দ্র তৈরি হয়েছে।, প্রথম দফায় ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ ভ্যাকসিনের ডোজ পাওয়া যেতে পারে বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর। প্রথম পর্যায়ে অতিরিক্ত ঝুঁকিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়া হবে । এরপর প্রোটোকল অনুযায়ী বাকিদের দেওয়া হবে।
রবিবার কোভিশল্ড ও কোভ্যাক্সিনকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ডিজিসিআই।রাজ্যের ৩ জায়গায় ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিনের ড্রাই রান চালানো হয়েছে। বিধাননগর পুরসভার অন্তর্গত দত্তাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মধ্যমগ্রাম পুরসভার অন্তর্গত আর্বান প্রাইমারি হেলথ সেন্টার ফোরে, এবং আমডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে ওই মহড়া চালানো হয়। পরবর্তী পর্যায়ে গোটা রাজ্যে টিকাকরণের মহড়া দেয়া হবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব ঘোষণা করেছেন, ১০ দিনের মধ্যে দেশজুড়ে জরুরি ভিত্তিতে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকাঠামো তৈরি রয়েছে। বলেন, ৩ জানুয়ারি অ্যাপ্রুভাল দেওয়া হয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে ইমপ্লিমেন্ট করতে পারি। তবে, এই সিদ্ধান্ত সরকারকে নিতে হবে।তার দু’দিনের মধ্যেই সমস্ত জল্পনার অবসান করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়ে দিল, আগামী সপ্তাহ থেকে দেশজুড়ে ভ্যাকসিন দিতে তারা প্রস্তুত আছেন। কীভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, তা বুঝে নিতে রবিবার দেশজুড়ে মহড়া হয়। রাজ্যের ৩ জায়গায় করা হয় ভ্যাকসিনের ড্রাই রান।
বিধাননগর পুরসভার অন্তর্গত দত্তাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মধ্যমগ্রাম পুরসভার অন্তর্গত আর্বান প্রাইমারি হেলথ সেন্টার ফোরে, এবং আমডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে হল টিকাকরণ প্রক্রিয়ার মহড়া। প্রত্যেক জায়গায় ২৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী শনিবার অংশ নেন মহড়ায়। সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রেখে বসানো হয় স্বাস্থ্যকর্মীদের। তারপর এক একজন করে তাঁদের প্রথমে ডেকে নেওয়া হয়। ওয়েটিং রুমে, সেখানে হয় নথি পরীক্ষা। এরপর নিয়ে যাওয়া ভ্যাকসিনেশন রুমে সেখানে হয় স্বাস্থ্যপরীক্ষা। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর স্বাস্থ্যকর্মীকে রাখা হয় অবজার্ভেশন রুমে। মহড়া চলাকালীন আইসিএমআরের পোর্টাল খুলতে গিয়ে কী অভিজ্ঞতা হয়েছে তা নথিভুক্ত করা হয়। স্বেচ্ছা সেবকদের কী কী প্রশ্ন ছিল তাও নথিভুক্ত করা হয়। সূত্রের খবর, এই নিয়ে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে। সেই সফল ড্রাই রানের পর এদিন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব জানিয়েছেন, প্রথম দফায় ৩ কোটি ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তার মধ্যে রয়েছেন ১ কোটি স্বাস্থ্যকর্মী। বাকি ২ কোটি ভ্যাকসিন পাবেন করোনা যোদ্ধা।