এই মুহূর্তে জেলা

টিবি রোগিদের দত্তক নেওয়ার আহ্বান স্বাস্থ্য দপ্তরের!

হুগলি, ২৫ মার্চ:- ২০২৫ সালের মধ্যে যক্ষা নির্মূল করতে ঝাঁপিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। সেই লক্ষে সচেতনা প্রচারের পাশাপাশি একাধিক কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে। হুগলি জেলাতেও চলছে সেই কর্মসূচী। এদিন হুগলি সার্কিট হাউসে জেলা টিবি ফোরামের মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় যক্ষা নির্মূল প্রোগ্রামের অন্তর্গত এই কর্মসূচীতে হুগলিতে টানা একশ দিন বিশেষ কর্মসূচী নেওয়া হয়। যক্ষা উপসর্গ আছে এমন ব্যাক্তিদের চিহ্নিত করে পরীক্ষা করানো থেকে আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু হয় ২৪ ঘন্টার মধ্যে। হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারীক মৃগাঙ্ক মৌলি কর জানান, হুগলি জেলায় টিবির প্রবনতা আগে থেকেই বেশি। কারন গঙ্গার পারে বিভিন্ন কলকারখানা আছে। বিশেষ করে জুটমিল এলাকায় শ্রমিকরা যে ভাবে থাকে তা খুবই অস্বাস্থ্যকর। টিবি সঠিক সময়ে ধরা না পরা, পরলেও চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর তা নিয়মিত না করা, যার ফলে মৃত্যু। মানুষকে সচেতন করতে পারলে মানুষ নিজে থেকে সচেতন হলেই এই টিবি নির্মূল করা যাবে। টিবির উপসর্গ দেখা দিলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। সেক্ষেত্রে কফ পরীক্ষা ন্যাট পরীক্ষা বুকের এক্সরে করে যদি ধরা পরে। তারপর দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে ছয় মাস ওষুধ খেলে টিবি সারবে। টিবি রোগিকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হয়। তার জন্য সরকারি তরফে এক হাজার টাকা করে বরাদ্দ আছে।

যেখানে সাধারন ওষুধ কাজ করে না। সেখানে ভর্তি করে তাদের চিকিৎসা করাতে হয় এটা একটা সমস্যা। হুগলি জেলায় মৃত্যু হার অনেক বেশি ছিল সেটা কমিয়ে আনা গেছে। গত বছর ২৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে টিবি আক্রান্ত হয়ে।চলতি বছরে সংখ্যাটা এখনো পর্যন্ত ২৫ জন। বর্তমানে সারে তিন হাজার চিকিৎসাধীন রয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, গড তিন মাস ধরে টিবি চিহ্নিত করনে স্পেশাল ড্রাইভ দেওয়া হয়েছিল। আমরা স্ক্রিনিং করেছি। আগে টিবির চারটি উপসর্গের কথা বলতাম। এখন টেন এস বা দশটি উপসর্গের কথা বলছি। যার ফলে সামান্য উপসর্গ থাকলেও কেউ যেন চিকিৎসার বাইরে না থাকে। এই স্পেশাল ড্রাইভে আমরা ১৬৩০ জন রোগি খুঁজে পেয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত চিহ্নিত করা যায় যে টিবি আক্রান্ত কারা। তাহলে তাদের চিকিৎসা টা দ্রুত শুরু করা যাবে।

দেখা গেছে দেরিতে শনাক্ত হওয়ার কারণে ৪০ শতাংশ টিবি আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। একজন কারো টিবি হলে সেটা হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। ফলে বাড়ির অন্যদেরও হতে পারে। সেটা লুকিয়ে গেলে নিজের এবং সমাজের ক্ষতি। দেখা গেছে সমাজে আর্থিকভাবে দুর্বল যারা তাদের মধ্যেই টিভি রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। তাই একটি প্রকল্প আছে নিক্সায় মিত্র। সেখানে যে কেউ টিবি রোগীকে দত্তক নিতে পারেন। মাসে পাঁচশ টাকা করে তাদের পুষ্টিকর খাবার কিনে দিলে ছয় মাসে ওষুধের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেয়ে সুস্থ হয়ে উঠবে রোগি। তোমরা আশা করছি আগামী বছরের মধ্যে লক্ষে পৌঁছানো সম্ভব হবে। এদিন সার্কিট হাউসে উপস্থিত ছিলেন, এডিএম জেলা পরিষদ অনুজ প্রতাপ সিং, সিএমওএইচ মৃগাঙ্ক মৌলি কর, ডেপুটি সিএমওএইচ-২ দেবযানী বসু মল্লিক, হু এর প্রতিনিধি, সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি, বিভিন্ন এনজিও, দুর্বার মহিলা সমিতি, টিবি জয়ীরা।