এই মুহূর্তে জেলা

তান্ত্রিকের ফাঁসির রায় শোনালো আরামবাগ আদালত।

হুগলি, ১ অক্টোবর:- তন্ত্র সাধনার নাম করে এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুন করার অভিযোগে অভিযুক্ত তান্ত্রিকের স্ত্রীর ফাঁসি ও শিশুর দিদিমার যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করলো হুগলির আরামবাগ মহকুমা আদালত। অভিযুক্তদের নাম সুশীলা মাঝি বয়স ৬৭ এবং সাগরিকা পন্ডিত বয়স ৪০। মঙ্গলবার মহকুমা আদালতে মূল অভিযুক্ত সাগরিকা পন্ডিতের ফাঁসির সাজা ও সুশীলা মাঝির যাবজ্জীবন সাজা সহ 15 হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালে ঘটনাটি ঘটে হুগলির আরামবাগ মহকুমার খানাকুলের রাধাবল্লভপুর গ্ৰামে। অভিযুক্ত সুশীলা মাঝির এক মেয়ে রোগে ভুগছিলেন। সেই সময় ওই এলাকার এক তান্ত্রিক মূরারী পন্ডিতের সাথে যোগাযোগ করেন। ওই তান্ত্রিক সুশীলাকে প্রস্তাব দেয়, যদি কোন শিশুকে নরবলি দেওয়া হয় তাহলে তার মেয়ে রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে।তান্ত্রিকের কথা বিশ্বাস করে সুশিলা তার নিজের নাতনিকে ওই তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে যায়। এরপর ওই শিশুকন্যাকে তন্ত্র সাধনার নাম করে হাত বেঁধে এবং মুখে কাপড় বেঁধে ধর্ষণ করে খুন করে, এলাকারই ঘোন্টু সিং এর বাড়ির পাশে সেপটিক ট্যাংকের ভেতর ফেলে দেয়।

মেয়েকে দেখতে না পেয়ে শিশু কন্যার পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি করে, কোথাও না পেয়ে খানাকুল থানার দ্বারস্থ হন বাবা। একটি নিখোঁজে ডায়েরী করেন। তদন্তভার দেওয়া হয় পুলিশ আধিকারিক বুদ্ধদেব সরকারকে। তদন্তে নেমে শিশু কন্যাকে উদ্ধার করেন সেপটিক ট্র্যাঙ্ক থেকে। এরপর তান্ত্রিক দম্পতি মুরারি পন্ডিত ও তার স্ত্রী সাগরিকা পন্ডিতসহ শিশুকন্যার দিদিমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই মামলা চলতে থাকে আরামবাগ মহকুমা আদালতে। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের বিচারক কৃষাণ কুমার আগরওয়াল এই রায় দেন। জানা গেছে, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি জেল হেফাজতে থাকাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তান্ত্রিক মুরারি পন্ডিত। দুইজন অভিযুক্তদের মধ্যে সাগরিকা পন্ডিতের ফাঁসি যিনি তান্ত্রিকের স্ত্রী, অন্যদিকে মৃত শিশু কন্যার দিদিমা সুশীলা মাঝির যাবজ্জীবন সহ ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে মহামান্য আদালত। আদালত সূত্রে আরো জানা গেছে মৃত শিশুকন্যার পরিবারকে ৩ লক্ষ টাকা সরকারি সাহায্যের নির্দেশ দেয় আদালত।।অন্যদিকে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী জানান এই রায় এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।