এই মুহূর্তে কলকাতা

বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় রিমেলের দাপটে রাজ্যে মৃত চার।

কলকাতা, ২৭ মে:- রাজ্য সরকার বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় রিমেলের ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা শুরু করেছে। দুর্যোগে এ পর্যন্ত সরকারি ভাবে চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যার মধ্যে বাড়ি ধ্বসে কলকাতায় একজনের এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গাছ চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বিদ্যুৎকৃষ্ট হয়ে পূর্ব বর্ধমানের দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ক্যানিংয়ের গাছ পড়ে গুরুতর আহত একজন ব্যক্তিকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঝড় বৃষ্টির ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে জেলা গুলির কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ মুখ্য়সচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকার কাছ থেকে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। পরে নিজের এক্স হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঝড় বৃষ্টিতে ফসল বাড়ি ঘরের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজ্য সরকার আইন মোতাবেক ক্ষতিপূরণ দেবে। যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য পৌঁছে যাবে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় যা যা করার দরকার, তা করা হবে।ঘূর্ণিঝড় রিমেলের জেরে রাজ্যের ২৪ টি ব্লক ও শহরাঞ্চলে ৭৯ টি ওয়ার্ড সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ বলে প্রাথমিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। ৩০ হাজারের বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে ২৫০০ টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত।

রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে সম্পূর্ন ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলোর জন্য যথাযথ সমীক্ষার পর এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে বলে রাজ্য সরকার জানিয়েছে। ২৭ হাজার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এছাড়াও জানা গেছে ঝড়ের তাণ্ডবে রাজ্যে গাছ পড়েছে ২১৪০ টি। বিদ্যুতের খুঁটি পড়েছে ১৭০০ টি। ৩০০-এর বেশি ইলেকট্রিক পোল পড়েছে শুধুমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। খুঁটি উল্টে এবং তারের উপর গাছ পড়ে বহু জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা রাতদিন কাজ করে প্রায় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ যোগাযোগ ফিরিয়ে এনেছেন বলে জানানো হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টির প্রকোপ থেকে বাঁচতে ১৪৩৮ টি ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ২০৭০৬০ জনকে। যার মধ্যে বর্তমানে ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন ৭৭২৮৮ জন। কমিউনিটি কিচেন চলছে ৩৪১ টি। এখনও পর্যন্ত মোট ১৭৭৩৯টি ত্রিপল বিলি হয়েছে। রাজ্যে ক্ষয়ক্ষতি সব থেকে বেশি সুন্দরবন ব্লকে। সেখানে ৩০০-রও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সুন্দরবেনে একাধিক জায়গায় হাওয়ার গতিবেগ বেশি থাকায় উদ্ধারকার্য করতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানা গেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১০০০ আশ্রয় শিবির চলছে। ঝড়ের জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় লট ৮-এর জেটি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তার জেরে দ্রুত মেরামতি করতে বলা হয়েছে পূর্ত দফতরকে।