এই মুহূর্তে জেলা

রচনার সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা বলাগরে।

হুগলি, ৮ মে:- বলাগরের বাকুলিয়ায় হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে জনসভা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুগলি লোকসভার অন্তর্গত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প তিনি আজকের বক্তৃতার শুরুতেই তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন হুগলি জেলার মনীষী রাজা রামমোহন রায়, শ্রীরামকৃষ্ণ, কেশব চন্দ্র চন্দ নাগের জেলা এই হুগলি জেলা। আরামবাগে এই রাজ্য সরকারের সময় মেডিকেল কলেজ তৈরি হয়েছে। এছাড়াও ইমামবাড়া, শ্রীরামপুর, চন্দননগর, তারকেশ্বর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে এই সরকারের আমলে। এই সরকারের আমলে জেলা জুড়ে অনেকগুলি জাতীয় সড়ক যা বিগত দিনে খুব খারাপ অবস্থায় ছিল তা নতুন করে নির্মাণ হয়েছে। অল্টারনেটিভ অনেকগুলি নতুন রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। আমি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত রেললাইন ছিল না আমি এই প্রকল্প স্যাংশন করে গেছিলাম রেলমন্ত্রী থাকা কালীন। ডানলপ কারখানা বন্ধ, জেসপ কারখানা বন্ধ। ২০১৩ সাল থেকে কারখানাগুলো বন্ধ। আমরা বলেছিলাম কারখানাগুলো রাজ্য সরকারকে দিয়ে দেওয়া হোক আমরা কারখানাগুলো চালাবো কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কারখানা গুলো আমাদের দেয়নি উপরন্ত বছরের পর বছর কারখানা গুলো বন্ধ করে রেখেছে। আমরা বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের প্রতি মাসে কিছু টাকা হেলথ কভারেযে দিচ্ছি। প্রতিবছর বন্যায় হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যাগ্রস্ত হয়। রাজ্য সরকার ৭৬৮ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছি। বলাগরে ইকো ট্যুরিজম পার্ক করেছি সবুজ দ্বীপে। ফুরফুরা শরীফে কে সাজিয়ে দিয়েছি। চন্দননগরে একাধিক পার্ক নির্মাণ হয়েছে।

হুগলি জেলার ঐতিহ্যপূর্ণ স্থানগুলি আমরা নতুন করে সাজাচ্ছি। রাজ্য সরকার দিঘাতেও পুরীর মন্দিরের আদলে রাজ্য সরকার মন্দির নির্মাণ করছে। মাহেশের মন্দিরেও আমরা নতুন করে প্রকল্প গ্রহণ করেছি। দক্ষিণেশ্বর কেউ আমরা নতুন করে সাজিয়েছি। বাংলার গৌরব কে নিয়ে কেউ যদি মজা করে তাদের বাংলার মানুষ ক্ষমা করবে না। বাংলায় মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের এনআরসি, সিএএ, ইউনিভার্সেল সিভিল কোর্ট আমরা মানি না। এমন একটা দল বিজেপি যত ডাকাত মাস্তান সবাইকে নিয়ে বিজেপি চলে। প্রধানমন্ত্রী শুধু সকালে ঘুম থেকে ওঠার থেকে শুরু করে ঘুমোনো পর্যন্ত নিজের ছবি তুলে বেড়ান। নিজের এত আত্মপ্রচার ভাল নয়। প্রধানমন্ত্রী সব মিথ্যে কথা বলে। বলছে রেশনের চাল কেন্দ্রীয় সরকার দেয়। কিন্তু এক পয়সা কেন্দ্রীয় সরকার দেয় না। প্রধানমন্ত্রী ডাহা মিথ্যা কথা বলছে। বলছে বিনা পয়সায় সবার বাড়িতে গ্যাস দেবে। আপনার অভিজ্ঞতায় মিলিয়ে নিন প্রতি মাসে গ্যাস কি আপনার বিনা পয়সা পান। এত মিথ্যে কথা বলে লজ্জাও করেনা। বাংলার মা বোনেদের উপর অত্যাচার হবে আর আমি চুপ করে থাকব এটা হতে পারে না। এবার এদের বিদায় দেওয়ার পালা এসেছে। এবার যদি মোদি ক্ষমতায় আসে তাহলে সব মানুষকে দেশ ছাড়া করবে। পাঁচ বছরে ১০ কোটি মানুষকে চাকরি দেবে বলেছিল।

উপরন্ত দেখলেন ২৬০০০ চাকরি কেড়ে নিল। আবার মিথ্যে বলছে, চাকরি হারাদের পাশে থাকবে। কোটে ওদের লইয়ার চুপ করে ছিল। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে সেই খবর যেই আমার কাছে এলো আমার মন ভরে গেল। আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি এই রায়ের ফলে ২৬০০০ শিক্ষকের চাকরি বেঁচে গেল। জিজ্ঞাসা করুন বিজেপিকে কেন ভোট দেব তোমরা বাংলাকে বঞ্চনা করেছো। মহিলাদের লাঞ্ছনা দিয়েছো। শুধু মিথ্যে কথা বলে যাচ্ছ বিনা পয়সায় গ্যাস দিচ্ছি, বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ দিচ্ছি। আপনার অভিজ্ঞতায় মিলিয়ে নিন সত্যি সত্যি আপনারা বিনা পয়সায় পান কিনা? তাই মানুষ বলছে বাহবা নন্দলাল হাজার টাকার গ্যাসে পুড়ছে বিনা পয়সার চাল। কর্মশ্রী প্রকল্পে রাজ্য সরকার ৫০ দিনের কাজে গ্যারান্টি করেছে গরিব মানুষের। ওরা ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে রেখেছে। আমাদের দলে কেউ অন্যায় করলে আমরা বরদাস্ত করি না। কিন্তু বিজেপি যত চোর ডাকাত মস্তান নিয়ে চলে। দেশের কোটি কোটি টাকা বিজেপি লুট করছে। দেশকে বিক্রি করেছে ওরা, ধর্মকে বিক্রি করেছে, জনস্বার্থকে বিক্রি করেছে ওরা। বিজেপিকে ভেঙে দিন ওরা দেশ ভাঙা চক্রান্ত করছে। জানুয়ারি মাস থেকে আমরা আবাস যোজনার টাকা দেওয়া শুরু করব দুটো কিস্তিতে ১১ লক্ষ গাড়ির টাকা প্রদান করবে রাজ্য সরকার। আগামী দিন বাংলা থেকে বিজেপিকে বিদায় দিতে হবে, দেশ থেকে বিজেপিকে বিদায় দিতে হবে। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় কে নির্বাচিত করে বিজেপির বিদায় নিশ্চিত করতে হবে।