এই মুহূর্তে জেলা

মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা শেষ, ভোর রাতে মৃত্যু অসুস্থ সৌরভ শেষকৃত্যের দায়িত্ব নিল উত্তরপাড়া পুরসভা।


হুগলি, ২৮ ফেব্রুয়ারি:- উত্তরপাড়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের রাজেন্দ্র এভিনিউ থার্ড লেনের গগণ ভিলার বাসিন্দা শ্যামলী মুখোপাধ্যায়(৭৮) তার ছেলে সৌরভ(৫৫) ও মেয়ে নন্দীতা(চুমকি ৫০) মুখোপাধ্যায় নিজেদের গৃহবন্দী করেছিলেন গত বেশ কয়েকদিন ধরে।প্রায় না খেয়ে দেয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরছিলেন তিনজনই। কুড়ি দিন না এক মাস তারা এভাবে ছিলেন তা কেউ খোঁজ নেয়নি। প্রতিবেশিরা জানতে পারেননি। সৌরভ তার এক আত্মীয়কে ফোন করে শুধু জানিয়েছিলেন মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছেন। সেই আত্মীয় বৈষ্ণব দাস মুখোপাধ্যায় কিছু একটা হয়েছে আন্দাজ করে উত্তরপাড়ায় আসেন ৪ ঠা ফেব্রুয়ারী। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। আত্মীয় বৈষ্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, গৃহকর্তা গগণ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর থেকে মানসিক অবসাদ তৈরী হয় পরিবারের।বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ করে দেন তারা।কারোও সঙ্গে যোগাযোগও ছিল না। মাস খানেক না খেয়েদেয়ে এভাবেই হয়ত পরে ছিলেন। আমাকে ফোন করে সৌরভ একদিন বলে দাদা আমার শরীর খুব খারাপ। এক মাস আমরা কিছু খাইনি। একবার আসবে। আমি আসতে চাইলে বলে আজ পূর্নিমা কাল এসো।

তা সত্ত্বেও আমি আসি।দরজা খোলেনা।এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকি তারপর কড়া নাড়ি। দরজা খুলেই বসে বলে। বলে আর দু দিন বাঁচব। আমি বলেছিলাম তুই মারা যাদি মা বোনকে কে দেখবে। গত সোমবার আবার আসেন বৈষ্ণব বাবু। দরজা বন্ধ থাকায় ভিতর থেকে সারা না পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যান কে খবর দেন তিনি। পুলিশ ডাকেন চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব। উত্তরপাড়া থানার পুলিশ তিনজনকে উদ্ধার করে উত্তরপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তাদের। আজ ভোর রাতে মৃত্যু হয় সৌরভের। তার মা কিছুটা সুস্থ হলেও বোনের অবস্থা এখনো সংকটজনক। আজ মৃত্যুর খবর পেয়ে চেয়ারম্যান দিলীপ যাবদ রাজেন্দ্র এভিনিউ এর ওই বাড়িতে যান।মৃতের পরিচয় পত্র সংগ্রহ করে হাসপাতালে যান। শেষকৃত্যের যাবতীয় ব্যবস্থা করেন। চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব বলেন, এই ধরনের মৃত্যুতে নিজেদের অপরাধী মনে হয়।আমাদের পাড়ার একজন মানুষ তারা কতদিন বাড়ি থেকে বের হননি খাননি অসুস্থতা ছিল। কোন প্রতিবেশীর সাথে কথা বলেননি কেউ জানতে পারেনি। সমাজে বা প্রশাসনের কারো কাছে কোন সাহায্য চাননি এটা আমাদের কাছে খুব কষ্টের। সমাজের শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ যেই শুনবে তার কাছে খুবই কষ্টের। আমরা যখন জানতে পেরেছি তারপর কিছু ব্যবস্থা নিয়েছি। গগন বাবুর স্ত্রী এবং মেয়ের চিকিৎসা চলছে আশা করব তারা সুস্থ হয়ে উঠবেন।