এই মুহূর্তে কলকাতা

আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জমি ও বাড়ি দেবে রাজ্য।

কলকাতা, ২৬ ফেব্রুয়ারি:- লোকসভা নির্বাচনের আগে বড় সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের। রাজ্যের সব পুরসভা, শহর, শহরতলি ও মফস্বল এলাকায় বসবাস করা আর্থিকভাবে দুর্বল অংশের মানুষদের মুখে হাসি ফোটাতে এবার তাঁদের ‘নিজ ভূমি নিজ গৃহ’ রাজ্য সরকার। এই সব মানুষদের মধ্যে যাদের নিজেদের বাড়ি নেই তাঁদের হয় রাজ্য সরকার জমি দেবে বাড়ি নির্মাণের জন্য অথবা তাঁদের হাতে সরাসরি বাড়ির চাবি তুলে দেবে। তবে আর্থিকভাবে দুর্বল অংশের মানুষ বলতে এক্ষেত্রে চিহ্নিত হবেন তাঁরাই যারা সরকারের কাছে খাতায় কলমে ইকোনমিকালি উইকার সেকশন বা ই ডব্লিউ এস তালিকাভুক্ত হয়ে আছেন। এদেরই মাথার ওপর পাকা ছাদের পাকাপাকি বন্দোবস্ত করে দেওয়া হবে পুরোপুরি রাজ্য সরকারের টাকাতেই। সরকারি খাস জমি কিংবা বিভিন্ন দফতরের হাতে থাকা জায়গা তুলে দেওয়া হবে ওই ভূমিহীনদের হাতে। কোথাও তেমন সুযোগ না থাকলে বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ই ডব্লিউ এস তালিকাভুক্তদের মধ্যে যাদের নিজেদের বাড়ি নেই তাঁদের মাথার ওপর পাকা ও নিজস্ব ছাদ করে দিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তাঁর নির্দেশেই এই প্রকল্পটির বাস্তবায়নে একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে। সেই মন্ত্রিগোষ্ঠীতে রয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক।

সেই মন্ত্রিগোষ্ঠীই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়িত করতে রাজ্যের সব পুর এলাকায় ভূমিহীন মানুষদের জমি দেবে সরকার। আর যেখানে জমির দাম বেশি কিংবা একলপ্তে বড় এলাকা পাওয়া মুশকিল, সেখানে গড়ে দেওয়া হবে আবাসন। কলকাতা, হাওড়া, বিধাননগর সহ একাধিক জায়গায় নিজস্ব খরচে বহুতল গড়ে দেবে রাজ্য সরকার। উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ ও জঙ্গলমহল এলাকায় সরকারি জমি তুলে দেওয়া হবে ভূমিহীনদের হাতে। তার জন্য জেলাশাসকের অধীনে থাকা ভূমি বণ্টন কমিটি প্রতিটি জেলায় এমন জমি চিহ্নিত করবে। সেব্যাপারে যাবতীয় তথ্য দেওয়া হবে প্রশাসনকে। নবান্নের আধিকারিকদের দাবি, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আইনে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষরাই এই জমি কিংবা বাড়ি দেওয়া হবে। সরকারের কাছে এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য জেলাস্তরে আবেদন করতে হবে তাদের। তারপর সেই আবেদন খতিয়ে দেখবে জেলার স্ক্রিনিং কমিটি। এরপরে বিভিন্ন ধাপে যাচাই করার পর গৃহীত হবে সেই আর্জি। খাস কিংবা বিভিন্ন দফতরের হাতে থাকা জমির পাট্টা-অধিকার ভূমিহীন মানুষদের হাতে তুলে দেবে রাজ্য। তবে কোথাও তেমনটা সম্ভব না হলে থাকবে ফ্ল্যাটের বন্দোবস্ত, যার ন্যূনতম মূল্য ধার্য হয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। সেটির মালিকানা তুলে দেওয়া হবে আবেদনকারীর হাতে। ভূমিহীন মানুষদের দিয়ে সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ। এটি আগামী দিনে বাংলাকে দেশের মধ্যে মডেল হিসেবে তুলে ধরবে।