এই মুহূর্তে জেলা

সকালে ডাক্তার, রাতে মৃৎশিল্পী, ভদ্রেশ্বরের চিকিৎসক বিপ্লবেন্দু।

হুগলি, ১৮ নভেম্বর:- সারাদিন তিনি একজন ডাক্তার আর রাত হলেই বাড়ি ফিরতে ডাক্তার হয়ে ওঠেন মৃৎশিল্পী। যে হাত স্টেথোস্কোপ দিয়ে রোগী দেখে সেই হাতেই আবার রূপদান হয় হৈমন্তিকার। হুগলির ভদ্রেশ্বরের চিকিৎসক বিপ্লবেন্দু তালুকদার তার নিজের হতেই তৈরি করেন দেবী জগদ্ধাত্রী প্রতিমা। সেই প্রতিমাই পূজো হয় জগদ্ধাত্রী পুজোতে। কলকাতা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক ও হেমাটোলজির প্রফেসর ডক্টর বিপ্লবেন্দু তালুকদার। প্রতিবছর তার বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোতে দেশ-বিদেশ থেকে নানান চিকিৎসকরা আসেন তালুকদার বাবুর হাতের কাজ দেখতে। কারণ ঠাকুর তৈরি করা তার কাছে এক নেশার মতন। মাটির টানে হাজারো পরিশ্রমের মধ্যেও সারা রাত জেগে তিনি বানিয়ে চলেছেন দেবী প্রতিমা। ছোটবেলা থেকেই বিপ্লবেন্দু-বাবুর মৃত শিল্পীদের প্রতি বিশেষ আগ্রহ। বয়স যখন তার ৭ বছর সেই সময় থেকেই তিনি নিজের হাতে ঠাকুর তৈরি করতেন।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে প্রতিমার দৈর্ঘ্য ও উচ্চতা। একেবারে কাঠামোর উপরে খড় বাধা থেকে শুরু করে মাটি লাগানো রং করা চালচিত্র তৈরি সব কাজই একার হাতে করেন বিপ্লবেন্দু বাবু। এই বিষয়ে তার স্ত্রী সঞ্চয়িতা তালুকদার জানান, সকালবেলায় আটটার মধ্যে তিনি বাড়ি থেকে রওনা দেন মেডিকেল কলেজের উদ্দেশ্য। রাতে বাড়ি ফেরেন আটটা নটা নাগাদ। বাড়ি ফিরে থেকেই শুরু হয় তার ঠাকুর তৈরির কাজ। যা চলে রাত আড়াইটা তিনটে পর্যন্ত। তিনি আরও বলেন, জগদ্ধাত্রী পুজোর আগে এই কয়েকটা দিন কিভাবে ডাক্তারবাবু এই কাজ সম্ভব করেন তা একমাত্র দেবী জগদ্ধাত্রী জানেন। বিপ্লবেন্দু বাবুর দাদা বলেন, ছোট থেকেই তার ভাইএর মৃৎশিল্পীদের প্রতি আকর্ষণ রয়েছে। ছোটো বেলায় স্কুল থেকে ফিরে চলে আসতেন তিনি পাল পাড়ায় মৃত শিল্পীদের ঠাকুরের গোলায়। ছোট থেকেই কাদামাটি নিয়ে তার খেলার শখ। সেই থেকেই ঠাকুর বানানোর প্রতি আগ্রহ যা এখনো চেপে ধরে রয়েছে তার মনে।