এই মুহূর্তে জেলা

নবম বর্ষে ডানকুনির মিলন সংঘের ভাবনা দুগ্গা থেকে দুর্গা।

হুগলি ১৭ অক্টোবর:- নবমতম বছরে মিলন সংঘ ডানকুনির দুর্গাপুজোর থিম ভাবনা “ দুগ্গা থেকে দুর্গা ”| থিম ভাবনার মূল বিষয় হলো জাতি, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণী নির্বিশেষে সকল নারীর শৈশব থেকে বার্ধক্য এর বেড়ে ওঠার কাহিনী। নারীর বেড়ে ওঠার যাত্রায় যে বিবিধ প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন তাদের হতে হয় তাই দেখানো হয়েছে গোটা পুজো মণ্ডপে। প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা কাঠামো যেভাবে নারীকে শিকলে বেঁধে রাখতে চায়, তাকে অবদমিত করে রাখতে চায় সমাজের মধ্যে তাই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গোটা মণ্ডপের মধ্যে। কোনো বিশেষ জাতি, ধর্ম বা শ্রেণী নয় সকল স্তরের নারীরাই যে এই পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামোয় অবহেলিত সেই বার্তাই বহন করছে এই থিম ভাবনা। তবে শুধু সেই নিপীড়নের কাহিনী নয় পুরুষতান্ত্রিকতার জগদ্দল পাথরকে সরিয়ে নারীরা যে ঐতিহাসিকভাবে তাদের সাফল্যের জয়যাত্রাকে প্রতিষ্ঠিত করছেন সমাজের প্রত্যেক ক্ষেত্রে সেটিকেও দেখানো হয়েছে বিভিন্ন আকৃতির নারী মূর্তির মধ্য দিয়ে।

গোটা মণ্ডপটি ১২০০ স্কোয়ার ফুট জায়গা জুড়ে নির্মিত হয়েছে। মণ্ডপের দুটি অংশ। সামনের অংশে রয়েছে ৩০ ফুট উচ্চতার দেবী দুর্গার মুখের অবয়ব এবং পিছনের মূল অংশে রয়েছে ৯০ ফুট উচ্চতার মুকুটসজ্জা, সেই মুকুটসজ্জার গায়েই রয়েছে ছোট বড়ো মাঝারি আকৃতির বিভিন্ন নারী মূর্তি। যে মূর্তি গুলো নারীর সাফল্যের জয়যাত্রার সাক্ষ্য বহন করছে। মণ্ডপের অন্দর মহলটি মাতৃ গর্ভের আদলে গড়ে উঠেছে। মাতৃ গর্ভের যে শক্তি, যে শক্তির কাছে পুরুষতান্ত্রিকতা পরাজিত হয়েছে আবহমান কাল ধরে তা তুলে ধরা হয়েছে। দেবী দুর্গার প্রতিমা এখানে মানবীয় রূপ পাচ্ছে, দেবী দুর্গার মুখের আদলটি সাধারণ নারীর মুখের আদলে তৈরী হয়েছে। একজন সাধারণ নারীর মধ্যে যে অসাধারনত্বের বীজ লুকিয়ে আছে তাকে বোঝাতেই এই প্রয়াস।

গোটা মণ্ডপ ভাবনাটি নির্মাণ করেছেন শিল্পী আশিস ভৌমিক। দীর্ঘ টানা ছয় মাস 45 জন কারিগর সম্মিলিত ভাবে কাজ করে এই মণ্ডপ টির রুপদান করছেন। পুজো কমিটির সম্পাদক হারান চন্দ্র বিশ্বাস জানিয়েছেন, “ ১২ই অক্টোবর মাননীয়া মুখমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় আমাদের পুজোর শুভ উদ্বোধন করেছেন ভার্চুয়ালি। আমরা ক্লাব সদস্যরা ওনার কাছে কৃতজ্ঞ। প্রশাসনিক সমস্ত বিধি নিয়ম মেনেই আমরা পুজো পালন করতে বদ্ধপরিকর।” ক্লাবের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক প্রিয়ঙ্কর দাস জানিয়েছেন, “ প্রত্যেক বছরের মতোই এবছরও মিলন সংঘ ডানকুনির পুজো প্রাঙ্গনে বিপুল সংখ্যক জনসমাগম হবে এবং এবছরের থিম ভাবনাটি মানুষের মনে একটা প্রগতিশীল ভাবনার জন্ম দেবে । ”