হুগলি, ৬ অক্টোবর:- কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সরকারি স্কুলের বড় বড় গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েতকে বা স্কুলকে না জানিয়েই জঞ্জাল পরিষ্কারের নামে সরকারি বড় বড় গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। ঘটনাটি ঘটেছে কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নপারা ৯ নম্বর সংসদ এলাকায়। অভিযোগ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা সৌমিতা খারার স্বামী পিন্টু খাড়া নপরা প্রাইমারি স্কুলের সরকারি বড় বড় গাছ কেটে বেআইনি ভাবে বিক্রি করে দিচ্ছেন। স্কুল ও পঞ্চায়েতকে ধোঁয়াশায় রেখেই ইতিমধ্যেই কেটে বিক্রি হয়ে গেছে বড় বড় গাছ। যদিও এই বিষয়ে কিছুই বলতে চাননা বলে জানান পঞ্চায়েত সদস্যা ও তার স্বামী। এই খবর জানার পরেই স্কুলে এসে বিষয়টি খতিয়ে দেখেন পঞ্চায়েতের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ পিন্টু চক্রবর্তী। তিনি বিষয়টি দেখে বলেন গাছ কাটা বেআইনি কাজ। আর এভাবে সরকারি স্কুলের গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়া অন্যায়। এটা যেই করুক তিনি পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধানকে বিষয়টি জনানবেন যাতে অভিযুক্তের শাস্তি হয়। এই বিষয়ে স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বলেন তিনি গত ১ তারিখ দায়িত্ব ছেড়েছেন স্কুলের।আর তিনি থাকা কালীন এই গাছগুলো কাটা হয়েছে।
গাছ কাটার ক্ষেত্রে স্কুলের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী পিন্টু খাড়া এসে বলেন পঞ্চায়েত থেকে বলা হয়েছে স্কুলের জঞ্জাল পরিষ্কার করা হবে এই বলে তিনি স্কুলের বড় বড় গাছগুলো কেটে গাড়ি করে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন। এটা খুবই অন্যায় কাজ। আজ পঞ্চায়েতের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ এসেছিলেন তিনি বিষয়টি দেখে ব্যাবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। এই বিষয়ে বর্তমান স্কুলের প্রধান শিক্ষক মানস ঘোষ বলেন তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই এই গাছগুলো কেটে নেওয়া হয়েছে। তারা স্কুলের জঞ্জাল পরিষ্কারের কথা জানিয়েছিলেন কিন্তু এভাবে বড় বড় গাছ কেটে নেওয়া হবে সেটা কেউ জানেনা। আর এই কাজ হয়েছে স্কুলে কেউ আসার আগে সকালে। পঞ্চায়েত কি ব্যাবস্থা নেই দেখা যাক। আর এই বেআইনি গাছ কাটার বিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধান কণিকা ঘোষ বলেন পঞ্চায়েত এই স্কুলের গাছ কাটার বিষয় কিছুই জানেনা। পঞ্চায়েত কখনো গাছ কাটার অনুমতি দেয়নি। সব জায়গায় গাছ লাগানোর কথা বলা হয় গাছ কাটার কথা কেউ বলেনা। কিন্তু তিনি এই স্কুলের গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার বিষয়টি জেনেছেন আর পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছেন যে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে।
আর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা হুগলি জেলা তৃণমূলের সম্পাদক আচ্ছেলাল যাদব বলেন এভাবে বেআইনি ভাবে গাছ কেটে নেওয়া অপরাধ। তিনি বর্তমান প্রধানকে বলবেন যাতে যে এই ঘটনার সাথে যুক্ত তার বিরুদ্ধে যেনো ব্যাবস্থা নেওয়া হয়। আর যেখানে পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বিরুদ্ধেই অভিযোগ সেখানে দল হয়তো টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু ভুল করে ফেলেছিল। তিনি বিষয়টা দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানাবেন। আর এই গাছ কাটার বিষয় প্রকাশ্যে আসতেই কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির মন্ডল সভাপতি রাজেশ রজক বলেন মুখ্যমন্ত্রী বলছেন গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান, আর এই দলের সদস্যরা বেআইনি ভাবে গাছ কেটে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। এই টাকার ভাগ প্রধান উপপ্রধান সবাই পায় কিন্তু এখন বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় এখন কিছু জানেনা বলছে। আর এলাকায় এভাবে বড় বড় গাছ কেটে বিক্রি হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। এলাকার এক বাসিন্দা বলেন তারা দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে ওই বড় বড় গাছগুলো দেখছেন। কিন্তু হটাৎ এখন সদস্যার স্বামী সেগুলো কেটে বিক্রি করে দিলো। এরবিরুদ্ধে পঞ্চায়েতের ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।