এই মুহূর্তে কলকাতা

ডিভিসির ছাড়া জলে দুই বঙ্গেরই একাধিক জেলায় বন্যার ভ্রুকুটি।

কলকাতা, ৪ অক্টোবর:- মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যার ভ্রুকূটি দেখা দিয়েছে। প্রতিবেশি সিকিমে বন্যার প্রভাব পড়েছে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কালিম্পং-এর বিস্তীর্ণ এলাকায়। সড়ক য়োগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে রাজ্যের বহু পর্যটক সিকিমে আটকে রয়েছেন বলে খবর। উত্তরবঙ্গেও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এমত অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মানুষকে নিরাপদে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি বন্যাবিধ্বস্ত সিকিমের প্রশাসনকে সবরকমের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। এদিন তিনি টেলিফোনে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি মানুষকে আশ্বস্ত করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, বিদ্যুত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন। রাজ্যের সিনিয়র আইএএস অফিসারদের একচি দলও উত্তরবঙ্গের দিকে রওনা হয়েছে।

শিলিগুড়ি, দার্জিলিং ও কোচবিহার থেকে তিস্তা সংলগ্ন একাধিক এলাকায় এনডিআরএফের চারটি দলের পাশাপাশি, সাত কোম্পানি এসডিআরএফ মোতায়েন করা হয়েছে। আরও দু কোম্পানি এনডিআরএফ মোতায়েন করা হচ্ছে। রঙপোতে আটকে থাকা একটি পরিবারকে উদ্ধার করতে এক কলাম সেনা চাওয়া হয়েছে। উত্তর বঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণ বঙ্গের বেশ কিছু এলাকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। তিনি জানান, এখনো পর্যন্ত তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সমস্ত কর্মীদের ছুটি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বন্যা বিধ্বস্ত সিকিমের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কালিম্পং এই তিন জেলাশাসককে প্রতিবেশী রাজ্যের সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ে রেখে বন্যা মোকাবিলায় কাজ করতে বলা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের পরিস্থিতি নিয়ে সিকিমের মুখ্য সচিব এরাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।

সেখানে পারস্পরিক সমন্বয় রেখে কাজ করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। বন্য়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের তরফে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ০৩৩-২২১৪৩৫২৬ ও ১০৭০-এই নম্বরে ২৪ ঘণ্টার ওই কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করা যাবে। পর্যটন দফতরের তরফেও পৃথক কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। ১৮০০-২১২-১৬৫৫ ও ৯০৫১৮৮৮১৭১ এই দুটি নম্বর চালু হয়েছে। প্রত্যেকটি জেলায় কন্ট্রোলরুম চালু করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী খোদ বন্যাপরিস্থিতির ওপর নজরদারি করছেন। উত্তরবঙ্গের কালিম্পং, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কুচবিহারের একাংশের নীচু এলাকা থেকে মানুষকে সরানোর কাজ চলছে। ৫৮০০র বেশি মানুষকে ২৮ টি ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ওই পাঁচ জেলার পাঁচ হাজারের বেশি মানুষকে ১৯০ টি ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। ত্রাণ শিবিরে যাতে ডেঙ্গু না ছড়ায় সেজন্য ত্রাণ সামগ্রীর সঙ্গে মশারিও বিলি করতে বলা হয়েছে।