হুগলি, ১৩ সেপ্টেম্বর:- মাকে বলেছিল একটু অপেক্ষা কর, তারপর আর কষ্ট করতে হবে না। সেই ছেলে মায়ের কষ্ট শতগুণ বাড়িয়ে চলে গেলো! কান্নায় শোকের বাঁধ ভাঙল ব্যান্ডেল গোপিনাথপুরে রায় বাড়িতে। সাধন রায় ভালো ক্রিকেট খেলত। স্বপ্ন ছিল পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলে চাকরি পেয়ে মায়ের কষ্ট দূর করবে। কিন্তু একটা দূর্ঘটনা সব শেষ করে দিল। সাধন হাওড়া রামরাজাতলার একটি আইটিআইআই কলেজে পড়ত। ব্যান্ডেল থেকে হাওড়া হয়ে কলেজে যেত। গতকালও গিয়েছিল কলেজে। বিকালে ফেরার সময় ভীর ট্রেনের ভিতর ঢুকতে পারেনি। গেটে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ করেই দাশনগর ঢোকার সময় একটি বাঁকের মাথায় পোস্টে ধাক্কা লাগে তার। মাথায় গুরুতর চোট পেয়ে সংজ্ঞা হারায়। তার সহপাঠিরা তাকে প্রথমে টিকিয়াপাড়া রেল হাসপাতাল সেখান থেকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে বাঁচানো যায়নি সাধনকে।
ছাত্রের বাবা দীপু রায় কর্মক্ষম নেই তার। মা নির্মলা রায় পরিচারিকার কাজ করে ছেলেকে পড়াশোনা করাচ্ছিলেন। তাদের বড় ছেলে সুমন আলাদা থাকে। নির্মলা বলেন, ছেলে বলল কলেজে ভর্তি হবে। সুদে টাকা ধার করে ভর্তি করলাম।বই কেনার পয়সা ছিল না বন্ধুদের থেকে নিয়ে পড়ত। নিজের খরচ নিজেই চালাত স্কুলে পড়ার সময় থেকে। পুজোর সময় মেলা করে।এবার বলল মা কলেজ ছুটি থাকবে ওই সময় মেলায় যাব। তোমার কি লাগবে বল। মাঝে মধ্যে না খেয়ে যেত কলেজে। গতকালও খেয়ে যায়নি। আমাকে বলেছিল দু বছর পর তোমাকে আমি বসিয়ে খাওয়াবো, আর লোকের বাড়ি কাজ করতে হবে না। এখন কি হবে! সব তো শেষ হয়ে গেলো। সাধনের বন্ধ রনীত সাহা বলেন, আমরা একসঙ্গে ক্রিকেট খেলতাম।অল রাউন্ডার ছিল সাধন। খুব ভালো খেলত।ওর স্বপ্ন ছিল একটা চাকরি পেয়ে মাকে সাহায্য করবে।