এই মুহূর্তে জেলা

রাজ্যপালের হস্তক্ষেপে তড়িঘড়ি উপাচার্য নিয়োগ, চাকরিতে নিশ্চিন্ত চুঁচুড়ার সায়ন।

হুগলি, ১ সেপ্টেম্বর:- কেন্দ্র সরকারের চাকরি হয়েছে, শুধুমাত্র শংসাপত্রের জন্য যোগদান করতে পারছিলেন না, তাই রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চুঁচুড়ার যুবক। আর সেই খবর প্রকাশ হওয়ার পরেই সায়ন কর্মকারকে ডেকে নিলেন রাজ্যপাল। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে সায়ন ও তার পরিবার। চুঁচুড়া দক্ষিণায়ণের বাসিন্দা সায়ন কর্মকার কেন্দ্রীয় সরকারের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (ডিআরডিও) এ পরীক্ষা দিয়ে মেধাতালিকায় এক নম্বরে জায়গা করে নেন। ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন করিয়ে চাকরিতে যোগ দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয় তাঁকে। কিন্তু আটকে গিয়েছিল সায়নের চাকরি (Hooghly youth not get DRDO job)। সায়ন তখন জানিয়েছিলেন, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে একাধিকবার যাতায়াত করেও মেলেনি ডিপ্লোমার শংসাপত্র। তাঁর চাকরি আটকে আছে জানানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজের প্যাডে হাতে লিখে একটি শংসাপত্র দেয়। প্যাডে লিখে দিলেও ডিআরডিও তা গ্রহণ করেনি। পরে আবার একটি ছাপা শংসাপত্র দেওয়া হয় যেখানে উপাচার্যের কোনও সই নেই।

তাই সেই শংসাপত্রও গ্রহণ করেনি ডিআরডিও। সায়ন আরো বলেছিলেন, “২৭ মে ২০২৩ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ছিলনা। সহ-উপাচার্য, ডিনও ছিলনা। আমার মতো অনেক ছাত্রই পরীক্ষায় পাশ করে বসে আছে। কিন্তু শংসাপত্র পায়নি। আমি শংসাপত্র না পেলে আমার চাকরিটাই হয়তো হবে না। তাই বাধ্য হয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছি।যদিও তখন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে পারেনি সায়ন। সেই সময় রাজ্যপালের অফিসে একটি আবেদনপত্র দিয়ে এসেছিল সায়ন। যাতে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি সহ রাজ্যের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে উপাচার্য নেই সেখানে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ করা হয়। চন্দননগরের কানাইলাল স্কুল থেকে বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে বি-টেক করেন সায়ন। এরপর ২০১৭-১৮ সালে রাজারহাটের ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজ থেকে ফটোগ্রাফি অ্যান্ড ভিডিও প্রোডাকশন নিয়ে ডিপ্লোমা করেন। তার আগে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন কলেজ থেকে ৬ মাসের সার্টিফিকেট কোর্সও করেন সায়ন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডিআরডিওতে টেকনিক্যাল ফটোগ্রাফার টেকনিশিয়ান পদের জন্য পরীক্ষায় বসেন। লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেন।

এপ্রিল মাসের ৩ তারিখ পুনেতে রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্সে গিয়ে মৌখিক পরীক্ষা দেন। ৭ মে রেজাল্ট বেরোয়। ১২ মে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের চিঠি আসে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় শংসাপত্র না পাওয়ায় চাকরিতে যোগ দিতে পারছিলেন না সায়ন। আর তারপরেই সেই খবর প্রকাশ পায় সংবাদমাধ্যমে। আর সেই খবরের জেরে এবার রাজ্যপাল স্বয়ং ডেকে নেন সায়নকে।আজ শুক্রবার রাজ্যপালের সাথে দেখা করেন সায়ন কর্মকার। সেখান থেকে চুঁচুড়া বাড়িতে ফিরে সায়ন জানায় আজ তাকে রাজ্যপাল ডেকেছিলেন।রাজ্যপাল সায়ণকে বলেন তিনি বিষয়টা সংবাদমাধ্যমে দেখেছেন। আর দেখার পরেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন।আর সংসাপত্র পেতে অসুবিধা হবেনা।সোমবার তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলেছেন রাজ্যপাল। আর সেখান থেকে উপাচার্য এর সাক্ষর করা শংসাপত্র তুলে চাকরিতে যোগ দিতে বলেছেন। সায়ন এদিন রাজ্যপালের সাথে দেখা করে এসে আরো বলেন, এবার সত্যি অনেক ভালো লাগছে যে চাকরিটা তিনি এবার পাবেন। আর যেসব আরো ছাত্র ছাত্রী শংসাপত্র না পাওয়ার জন্য সমস্যায় পড়ছিল তাদেরও এবার সমস্যার সমাধান হলো। এতে তিনি ও তার পরিবার খুব খুশি। সায়নের মা দিপা কর্মকার বলেন এতদিন সত্যি খুব চিন্তায় ছিলাম যে ছেলের হয়ে যাওয়া চাকরি সে পাচ্ছিলনা। তবে এবার রাজ্যপাল ছেলেকে ডেকে সেই সমস্যার সমাধান করেছে এতে সত্যি খুব খুশি লাগছে এটা ভেবেই যে ছেলে এবার চাকরি পাচ্ছে।