এই মুহূর্তে কলকাতা

বিজেপির বিরোধিতার মধ্যেই সার্চ কমিটির সংশোধনী বিল বিধানসভায় গৃহীত।


কলকাতা, ৪ আগস্ট:- বিরোধী বিজেপির প্রবল বিরোধিতার মধ্যেই কলকাতা সহ রাজ্যের ৩১ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ে সার্চ কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিধি পরিবর্তনের সংশোধনী বিল আজ রাজ্য বিধানসভায় গৃহীত হয়েছে। অর্ডিন্যান্স আকারে এটি আগেই পাশ জারি হয়েছিল। এবার সেই অর্ডিন্যান্সকে আইনি স্বীকৃতি দিতে রাজ্য বিধানসভায় এই বিল আনা হয়। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, আচার্য তথা রাজ্যপালের মনোনীত সদস্যের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিতে ইউজিসি মনোনীত একজন সদস্য, রাজ্য সরকার মনোনীত একজন সদস্য এবং উচ্চ শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মনোনীত একজন সদস্য থাকবেন। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মনোনীত একজন সদস্যও থাকবেন। সার্চ কমিটি এবার থেকে উপাচার্য পদে তিন থেকে পাঁচ জনের নাম সুপারিশ করতে পারবে। যাঁদের নাম সুপারিশ করা হবে তাদের অন্তত দশ বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অথবা দশ বছর কোনও প্রতিষ্ঠিত গবেষণা সংস্থা বা শিক্ষা সংস্থায় প্রশাসনিক কাজে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকলেও চলবে।

বিরোধী বিজেপি এই বিলের তীব্র বিরোধীতা করেছে শঙ্কর ঘোষ সহ বিজেপি বধায়করা এই বিলে ইউজিসির নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে আরো আলোচনা ও সংশোধনের জন্য সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানান। মূলত মুখ্যমন্ত্রী নিবাচিত সদস্যকে সার্চ কমিটিতে রাখার এবং অবসরের পর উপাচার্যদের কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানোর তাঁরা প্রতিবাদ করেন। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, আইআইএমের মতো কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সার্চ কমিটিতে রাষ্ট্রপতির তিনজন প্রতিনিধি থাকে। তাতে দোষ না হলে রাজ্যের সার্চ কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি থাকলে অসুবিধা কোথায়। শিক্ষামন্ত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির বিধি মেনেই এই আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে রাজ্যপাল মনোনিত প্রতিনিধি ইউজিসির প্রতিনিধি থাকলে সুধুমাত্র মুখ্য়মন্ত্রীর প্রতিনিধি নিয়ে বিরোধীদের আপত্তি কেন তানিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।

রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রাখার বিষয়টিও ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রতিফলন বলে দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেন, আলিয়া সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাক্তন পুলিশকর্তা বা প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়োগ করে রাজ্যপাল নিজেই ইউজিসির বিধি ভঙ্গ করছেন। কারণ সেখানে স্পষ্ট বলা আছে উপাচার্য হিসাবে মনোনিত প্রার্থীর ১০ বছর অধ্যাপনা করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এদিকে বিরোধী বিজেপি এই বিলের বিরোধীতা করে একে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানায়। ভোটাভুটি হলে ওই প্রস্তাব ১২০-৫১ ভোটে পরাজিত হয় ও ধ্বনি ভোটে বিল বিধানসভায় গৃহীত হয়। পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, রাজ্য একতরফা ভাবে এই বিল পাশ করিয়েছে। তাঁরা এই বিল মানছেন না। নিজের বক্তব্য জানাতে বিরোধী দলনেতার এক প্রতিনিধি দল রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে অনুরোধ জানান, যাতে তিনি এই বিলে অনুমোদন না দেন।