এই মুহূর্তে কলকাতা

মঙ্গলবার ভোট গণনা, ৩৩৯টি কেন্দ্র খোলা হয়েছে রাজ্যে।

কলকাতা, ১০ জুলাই:- মঙ্গলবার রাজ্যে দশম পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোট গণনা। সমতলের ২০ জেলায় ত্রিস্তরীয় ও পাহাড়ে দুই জেলায় দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটের গণনা শুরু হবে সকাল আটটায়। গণনার জন্য রাজ্যে মোট ৩৩৯টি গণনা কেন্দ্র খোলা হয়েছে।গণনা পর্বে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা আটকাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ব্য়পক সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। গণনা পর্ব মসৃণ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে কঠোর নিরাপত্তার ব্য়বস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি গণনা কেন্দ্রেই মোতায়েন করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রতিটি গণনা কেন্দ্রে এক কোম্পানি করে বাহিনী মোতায়েন করার প্রস্তাব রয়েছে। এছা়ডা রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ ও ভিন রাজ্যের পুলিশও গণনা কেন্দ্রের পাশাপাশি আশপাশের এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করবে। প্রতিটি গণনা কেন্দ্রে থাকছে সিসিটিভির নজরদারি। গণনা কেন্দ্রের বাইরে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। প্রথমে ভোটকর্মীদের ভোট গণনা করা হবে, তারপর গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং পরিশেষে জেলা পরিষদের আসনে ভোট গণনা হবে।

রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানান, গণনা পর্ব পুরো শেষ হতে ১২ জুলাই পেরিয়ে যেতে পারে। তবে ভোটের মতো গণনা পর্বেও নিজেদের কর্মী ও এজেন্টদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগাগোড়া তাদের কেন্দ্র ছাড়তে নিষেধ করেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিরোধীরা ভোটের মতো দিনের মতো ব্যলট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়া বা যে কোনও রকমের প্ররোচনা দিতে পারে। এসব থেকে সতর্ক থাকতে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে দল। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি গণনা কেন্দ্র থাকছে মুর্শিদাবাদের ২৬। এরপরই রয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরে ২৫, পূর্ব বর্ধমানে ২৩ টি, বাঁকুড়াতে ২২ টি, উত্তর ২৪ পরগনায় ২২টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ২২, পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১ টি, পুরুলিয়া ২০ টি, বীরভূমে ১৯ টি, নদিয়া ১৮টি, হুগলিতে ১৮ টি,মালদায় ১৫ টি, হাওড়ায় ১৪ টি, কোচবিহারে ১২ টি, জলপাইগুড়িতে ১০ টি, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৮ টি, ঝাড়গ্রাম ৮ টি, পশ্চিম বর্ধমানে ৮টি, উত্তর দিনাজপুরে ৮টি, আলিপুরদুয়ার ৬ টি, দার্জিলিঙে ৫ টি, কালিম্পংয়ে ৪ টি। গত শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে বিপুল রাজনৈতিক হিংসা ও অশান্তির স্বাক্ষী থেকেছে রাজ্য।

শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের দিনই বিভিন্ন জেলা রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়ে ছিল। রাজনৈতিক হিংসায় শুধু মাত্র ভোটের দিন প্রাণ হারিয়েছে ১৮ জন। জায়গায় জায়গায় ভোট লুঠ, ছাপ্পা, ব্যাটল বাক্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনেক বুথে সকাল একঘণ্টার মধ্যেই ভোট গ্রহণ শেষ হয়ে যায়। আবার কোথাও কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখাও মেলেনি। বেশকিছু রাজনৈতিক সংঘর্ষে ভোটদান বন্ধ হয়ে যায়। ভোট শেষের পরেই জেলা প্রশাসনের থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন৷ সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে কোন জেলায় কতগুলি বুথে পুনরায় ভোট হবে, রবিবারই তার তালিকা প্রকাশ করে কমিশন। সেই মতোই সোমবার রাজ্যের ৬৯৪ কেন্দ্রে শুরু হয় পুনর্নির্বাচন। অন্যদিকে পঞ্চায়েত ভোট রাজ্যের হানাহানি ষে ঘটনা ঘটেছে সেই নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় বিএসএফের আইজি এবং রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।