কলকাতা, ১৭ জুন:- আবাস যোজনা প্রকল্পে রাজ্যের আট হাজার কোটি টাকার বেশি আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এবার জানা গেছে কেন্দ্র সরকার বাংলার ৭ লক্ষেরও বেশি পরিবারের আধার যাচাইয়ের কাজও আটকে দিয়েছে। এর ফলে আগামী দিনে যদি কেন্দ্রীয় বরাদ্দ মেলে তাও আধারের গেরোয় প্রাপ্য টাকা পাবেন না রাজ্যের আবাস প্রকল্পের উপভোক্তারা। কারণ এই যাচাই প্রক্রিয়াকে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন বলে ধরা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ফলে নথিভুক্ত উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাড়ি তৈরির টাকা ঢুকবে না বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে জন গেছে সঠিক উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দিতে আগামী ১ জুলাই থেকে নয়া নিয়ম চালু করছে কেন্দ্র। ঠিক হয়েছে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার সংযোগের পর আরও একবার করে তা যাচাই হবে অর্থমন্ত্রকের পিএফএমএস পোর্টালের মাধ্যমে।
এই কাজ সম্পূর্ণ হলে আধার ভিত্তিক পেমেন্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে টাকা পাঠানো হবে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে। কেন্দ্রের দাবি, এই যাচাই পদ্ধতি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়। তবে সেই যুক্তি মানতে নারাজ রাজ্য সরকার। বিভিন্ন সূত্র থেকে নবান্নের আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন, একমাত্র বাংলার ক্ষেত্রেই এত সংখ্যক উপভোক্তার আধার যাচাই বাকি। সর্বাধিক পিএফএমএস যাচাই হয়েছে গুজরাতের উপভোক্তাদের। এই তথ্য আরও একবার বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার তত্ত্ব সামনে আনল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কিন্তু বাংলার উপভোক্তাদের প্রতি কেন্দ্রের এই বঞ্চনাই এখন বাংলার মাটিতে পদ্মশিবিরের জন্য বড় বিপদ খাড়া করে দিয়েছে। বাংলার বুকে কেন্দ্রীয় আবাস প্লাস প্রকল্পে তালিকাভুক্ত উপভোক্তার সংখ্যা ১১ লক্ষ ১ হাজার ৯৫৫।
এদের প্রাপ্য মোট ৮ হাজার কোটি টাকা এখনও দেয়নি কেন্দ্র। আগে থেকে চলা আবাস সফ্ট প্রকল্পের ৬৩ হাজার ৮৩৫ জন উপভোক্তার এক-দুই কিস্তির টাকা এখনও বাকি। এদের মধ্যে সব মিলিয়ে মাত্র ৩.১৬ লক্ষের ক্ষেত্রে পিএফএমএস যাচাই সম্পূর্ণ করেছে কেন্দ্র। আবাস সফ্ট প্রকল্পের টাকা আগেই অনুমোদিত। কিন্তু নয়া নিয়মের গেরোয় বেশিরভাগই তা পাবেন না বলে আশঙ্কা। আর ১ জুলাইয়ের পর আবাস প্লাসের টাকা কেন্দ্র ছাড়লেও যাচাই বাকি থাকলে তাও কেউ পাবে না। এই সমস্যা এড়াতে রাজ্যের তরফে গত ১২ জুন অর্থমন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দিয়ে আধার যাচাইয়ে অগ্রাধিকার দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাজ্যের দাবি, ওই পোর্টালে আধার যাচাই ব্যর্থ হলে তার কোনও কারণ জানাচ্ছে না কেন্দ্র। ফলে ভুলত্রুটি সংশোধন সম্ভব হচ্ছে না। সব মিলিয়ে উপভোক্তাদের টাকা পাওয়া নিয়ে সংশয় বাড়ছে।
