এই মুহূর্তে কলকাতা

পঞ্চায়েত ভোটের আগেই রাস্তা সংস্কার ও নির্মাণে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাজ্যের।

কলকাতা, ৫ ফেব্রুয়ারি:- পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার রাস্তা সংস্কার ও নতুন রাস্তা নির্মাণের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সূত্রের খবর, প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সব ঠিকঠাক থাকলে, আগামী দেড় দুই মাসের মধ্যেই জেলার ওই সব রাস্তার সংস্কার বা নির্মাণের কাজ সেরে ফেলতে হবে। কেননা এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে মে মাসের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে বাংলার বুকে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প, আবাস যোজনা, মিড ডে মিল, গ্রামোন্নয়নের একাধিক প্রকল্পের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন মোদি সরকার। বাংলাকে বঞ্চিত করে উন্নয়নে ধাক্কা দেওয়ার কৌশল নিয়েছে গেরুয়া ব্রিগেড। কিন্তু এসব করে বাংলার উন্নয়ন যে আটকে রাখা যাবে না সেটা পদে পদে বুঝিয়ে দিচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্র সরকার নানা প্রকল্পের টাকা আটকে রাখলেও বাংলার উন্নয়নে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার দিকে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, সরকারি ভাবে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট এখনও চূড়ান্ত না হলেও, প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এই অবস্থায় মানুষের যা অন্যতম বড় চাহিদা, সেই রাস্তাঘাট করা বা সারানো না গেলে ভোটের আগে পরিকাঠামো তৈরিতে ইতিবাচক ছাপ রাখা সম্ভব নয়।

তাই অর্থকষ্টের মধ্যেও জোর পড়েছে রাস্তায়। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহেই অর্থ বরাদ্দ হওয়ার কথা। এ নিয়ে সম্প্রতি বৈঠকও করেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক শীর্ষকর্তারা। জেলাগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, চূড়ান্ত নির্দেশিকা প্রকাশের থেকে ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে সেই রাস্তা সংস্কার বা তার নির্মাণের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। এই সময়সীমা মানতে হলে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সব কাজ শেষ করে ফেলা দরকার। তবে নবান্নের আধিকারিকেরা এটাও জানিয়েছেন, ভোট ঘোষনার আগে একবার এই রাস্তা সংস্কার বা রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গেলে ভোট ঘোষণা হওয়ার পরেও তা আটকাবে না। রাজ্যের শাসক দল ইতিমধ্যেই এক বিশেষ দলীয় কর্মসূচী চালিয়ে জানতে পেরেছে যে, গ্রামবাংলায় গ্রামীণ রাস্তা নিয়েই মানুষের চাহিদা-দাবি-ক্ষোভ সবচেয়ে বেশি। সেই জায়গাটিই ভোটের আগে জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করতে চাইছে তাঁরা। সেই কারণেই আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও রাস্তা-খাতে বিপুল বরাদ্দ করচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আর তার জন্য পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা ব্যবহার করা হবে। অর্থ কমিশনের অনির্ধারিত বা আন-টায়েড খাতের অন্তত ৫০% অর্থ বরাদ্দ করতেই হয় রাস্তা তৈরির কাজে। সেখান থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে। বাকি টাকা আসবে কোথা থেকে? কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিত ভাবে সে সব প্রকল্প চালায় সেগুলির টাকা আটকে রেখেছে মোদি সরকার। কিন্তু ওই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকারের ভাগে যে টাকা দেওয়ার কথা সেই সব প্রকল্পের রাজ্যের ভাগের টাকাই এখন রাস্তা সংস্কার ও নির্মাণের জন্য ব্যয় করা হবে।