এই মুহূর্তে কলকাতা

দূষণের হার কমায় চারটি নদীতে স্নানের অনুমতি দেওয়ার আরজি জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি রাজ্যের।


কলকাতা, ১৩ জানুয়ারি:- দূষণ হার কমে যাওয়ায় রাজ্য সরকার বিভিন্ন জেলার দূষিত হিসাবে চিহ্নিত আরও চারটি নদীতে মানুষকে স্নান করার অনুমতি দেওয়ার আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে। মুর্শিদাবাদ এবং নদীয়া জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত জলঙ্গী নদী, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত কংসাবতী, বাঁকুড়া এবং পূর্ব বর্ধমান ও হুগলির ওপর প্রবাহিত দ্বারকেশ্বর, পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়ার সীমানা নির্ধারণকারি রূপনারায়ণ এই তালিকায় রয়েছে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের মুখ্য কারিগরি উপদেষ্টা তাপস গুপ্ত জানিয়েছেন বছর পাঁচেক আগে কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশের প্রায় ৩০০ নদীকে অত্যাধিক দূষিত হিসেবে স্নানের অনুপযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে। যার মধ্যে এরাজ্যের ১৭ টি নদী ছিল। তবে নদী দূষণ রোধে সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এরমধ্যে বেশ কয়েকটি নদীর দূষণমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দেশের নদীগুলির অবস্থা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। ওই রিপোর্টে দেশের মোট ১৬০টি নদীকে দূষণমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে যার মধ্যে রাজ্যের এই চার নদীও রয়েছে।

নদীর বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড (বিওডি)-এর উপর ভিত্তি করেই দূষণমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে বলে জলশক্তিমন্ত্রক উল্লেখ করেছে।বিভিন্ন শিল্প সংস্থা যেমন তাদের বর্জ্য শোধনের ব্যবস্থা করেছে তেমনি বিভিন্ন পুরসভা একাধিক সুয়ারেজ প্ল্যান্ট তৈরি করায় নদী দূষণ কমেছে।রাজ্য সরকারের সেই প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকার ময়ূরাক্ষী করলা শিলাবতি এবং কালজানি নদীকে স্নানের জন্য নিরাপদ হিসেবে শংসাপত্র দিয়েছে। পরের ধাপে এই চারটি নদীকেও যাতে ছাড়পত্র দেওয়া হয় সেজন্য কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে বলে তাপস বাবু জানান।বিওডির উপর ভিত্তি করে ২০১৮ সালে জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। ওই রিপোর্টে মোট ৩৫১টি নদীর বিশেষ অংশকে দূষিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।রিপোর্টে নদীগুলিতে অত্যধিক দ্রুতহারে অক্সিজেন কমে যাওয়া, মরা, পচা জীবজন্তু ফেলা, শহরের আবর্জনা, মলমূত্র ত্যাগ করা সহ কলকারখানার দূষিত পদার্থ মিশে যাওয়াকেই দূষণের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। রাজ্য নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী নদীর জলের বিওডির হার ৩ মিলিগ্রাম এর নীচে হলে তাকে দূষিত বলে ধরা হয়। সামপ্রতিক কালে সমীক্ষা করে দেখা গেছে রূপনারায়ণ,কাঁসাই,জলঙ্গী ও দ্বারকেশ্বকরে বিওডির স্তর তার উপরে উঠেছে।