এই মুহূর্তে কলকাতা

বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সহ একগুচ্ছ কর্মসূচির উদ্বোধনে আগামীকাল আসছেন প্রধানমন্ত্রী।

কলকাতা, ২৯ ডিসেম্বর:- প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২২-এ পশ্চিমবঙ্গ সফরে যাবেন। বেলা ১১-১৫ মিনিট নাগাদ প্রধানমন্ত্রী হাওড়া রেল স্টেশনে পৌঁছবেন। সেখানে তিনি হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সূচনা করবেন। তিনি কলকাতা মেট্রোর জোকা-তারাতলা শাখার পার্পল লাইনের উদ্বোধন করবেন এবং বিভিন্ন রেল প্রকল্পের শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন।দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী আইএনএস নেতাজী সুভাষ-এ পৌঁছবেন, নেতাজী সুভাষ-এর মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন এবং ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি – ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন (ডিএসপিএম – এনআইডব্লিউএএস)-এর উদ্বোধনকরবেন। তিনি ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গার অধীনে পশ্চিমবঙ্গের জন্য একাধিক নিকাশি পরিকাঠামো প্রকল্পের শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। দুপুর ১২-২৫ নাগাদ প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল গঙ্গা কাউন্সিলের দ্বিতীয় বৈঠকে পৌরোহিত্য করবেন। দেশে সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে শক্তিশালী করতে আরও একটি পদক্ষেপ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২-এ ন্যাশনাল গঙ্গা কাউন্সিল (এনজিসি)-র দ্বিতীয় বৈঠকে পৌরোহিত্য করবেন। কেন্দ্রীয় জল শক্তিমন্ত্রী, পরিষদের অন্যান্য সদস্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এবং উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীরা বৈঠকে উপস্থিতথাকবেন।

গঙ্গা নদী এবং তার উপ-নদীগুলির দূষণ নিয়ন্ত্রণের তত্ত্বাবধান এবং নদীর পুনরুজ্জীবনের জন্য সার্বিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল গঙ্গা কাউন্সিলকে। প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা (এনএমসিজি)-রঅধীনে ৯৯০ কোটি টাকা মূল্যের বেশি ব্যয়ে নির্মিত সাতটি নিকাশি পরিকাঠামো প্রকল্প(২০টি বর্জ্য শোধন কেন্দ্র এবং ৬১২ কিলোমিটার নেটওয়ার্ক)-এর উদ্বোধন করবেন। এইপ্রকল্পগুলি থেকে উপকৃত হবে নবদ্বীপ, কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, বজবজ, ব্যারাকপুর,চন্দননগর, বাঁশবেড়িয়া, উত্তরপাড়া, কোতরং, বৈদ্যবাটি, ভদ্রেশ্বর, নৈহাটি, গারুলিয়া,টিটাগড় এবং পানিহাটি পুরসভা। এই প্রকল্পগুলি পশ্চিমবঙ্গে নিকাশি পরিশোধন ক্ষমতা ২০০ এমএলডি বৃদ্ধি করবে। প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা (এনএমসিজি)-রঅধীনে আরও পাঁচটি নিকাশি পরিকাঠামো প্রকল্প (আটটি নিকাশি শোধন কেন্দ্র এবং ৮০কিলোমিটার নেটওয়ার্ক)-এর শিলান্যাস করবেন।

এগুলির জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১,৫৮৫ কোটিটাকা। এই প্রকল্পগুলি পশ্চিমবঙ্গে নতুন এসটিপি-র ক্ষমতা ১৯০ এলএমডি বৃদ্ধি করবে। এইপ্রকল্পগুলি থেকে উপকৃত হবে উত্তর ব্যারাকপুর, হুগলি-চুঁচুড়া, কলকাতা পুরসভাএলাকা-গার্ডেনরিচ ও আদি গঙ্গা (টলি নালা) এবং মহেশতলা টাউন। প্রধানমন্ত্রী প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কলকাতার ডায়মন্ডহারবার রোডে জোকায় নির্মিত ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি – ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন (ডিএসপিএম – এনআইডব্লিউএএস)-এর উদ্বোধন করবেন। এই প্রতিষ্ঠানটি দেশে জল, পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করবে। কেন্দ্র, রাজ্য এবং স্থানীয় প্রশাসনকে তথ্য ও পরামর্শ দেবে এইকেন্দ্রটি। প্রধানমন্ত্রী হাওড়া রেল স্টেশনে হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়িবন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করবেন। অত্যাধুনিক এই সেমি-হাইস্পিড ট্রেনে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের সব রকম ব্যবস্থা রয়েছে।

ট্রেনটি যাতায়াতের পথে বোলপুর, মালদা টাউন,বারসোই এবং কিষাণগঞ্জ স্টেশনে থামবে। প্রধানমন্ত্রী জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো প্রকল্প (পার্পল লাইন)-এর জোকা-তারাতলা অংশের উদ্বোধন করবেন। ৬.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই অংশে জোকা, ঠাকুরপুকুর, সখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা, বেহালা বাজার এবং তারাতলা – এই ছ’টি স্টেশন রয়েছে। এটি করতে খরচ পড়েছে ২,৪৭৫ কোটি টাকার বেশি। এই প্রকল্পের উদ্বোধনের ফলে সরশুনা, ডাকঘর, মুচিপাড়ার মতো কলকাতার দক্ষিণাংশ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার যাত্রীরা প্রভূত উপকৃত হবেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে চারটি রেল প্রকল্পও উৎসর্গকরবেন। এর মধ্যে রয়েছে বৈঁচি-শক্তিগড় তৃতীয় লাইন, এর জন্য খরচ হয়েছে ৪০৫ কোটি টাকা;ডানকুনি-চন্দনপুর চতুর্থ লাইন প্রকল্প, এর জন্য খরচ হয়েছে ৫৬৫ কোটি টাকা; নিমতিতা-নিউফারাক্কা ডবল লাইন, এর জন্য খরচ হয়েছে ২৫৪ কোটি টাকা এবং আমবাড়ি ফালাকাটা-নিউ ময়নাগুড়ি-গুমানিহাট ডবল লাইন প্রকল্প, এর জন্য খরচ হয়েছে ১,০৮০ কোটি টাকার বেশি। প্রধানমন্ত্রী ৩৩৫ কোটি টাকার বেশি খরচে নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশনের পুনরুন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাসও করবেন।