নদীয়া, ১৬ ডিসেম্বর:- সুরাট থেকে শাড়ি এ রাজ্যে আসা বন্ধ না হলে কোনদিনই ঘুরে দাঁড়াবে না রাজ্য তথা শান্তিপুরের তাঁত শিল্প। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র সুতোর ব্যাংক তৈরি করেছেন, যেখান থেকে স্বল্পমূল্যে সুতো কিনতে পারবেন তাঁত শিল্পর সাথে যুক্ত তাঁতিরা। এদিন তাঁত শ্রমিকদের নিয়ে এক রাজ্য সম্মেলনে এসে এ কথা বললেন রাজ্যের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। আজ নদীয়ার শান্তিপুরের পৌর স্টেডিয়ামে রাজ্যের ছয়টি জেলার তাঁত শ্রমিকদের নিয়ে তৃণমূল প্রাথমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এক রাজ্য সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক, রাজ্যের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, রাজ্য আইএনটি টিউসির সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও ছিলেন শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী, শান্তিপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ সহ তৃণমূলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্বরা যদিও এই রাজ্যে সম্মেলনে বর্তমান তাঁত শিল্প নিয়ে একাধিক উন্নয়নমূলক বার্তা দেন মন্ত্রী সপন দেবনাথ ও শ্রমো মন্ত্রী মলয় ঘটক। যদিও তাঁত শিল্পর সাথে যুক্ত তাঁতিদের কেউ এই সম্মেলনে তাদের সার্বিক অবস্থার কথা বলার জন্য সুযোগ দেওয়া হয়।
বেশিরভাগ তাঁত শিল্পীদের অভিযোগ, আগে এ রাজ্যের হস্ত চালিত তাঁতের শাড়ি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তো, এখন ভিন রাজ্য থেকে বিভিন্ন ধরনের শাড়ি এ রাজ্যে এসে এ রাজ্যের তাঁত শিল্প পুরোপুরি তলানিতে। তাঁতিরা সংসার চালাতে পারছে না, মহাজনেরা সুতো কিনতে পাচ্ছে না। বেশিরভাগ তাঁতের শাড়ি সুরাট থেকে এ রাজ্যে ঢুকছে, যার কারণে শান্তিপুর তথা রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সুতির সুতোর তৈরি তাঁতের শাড়ি আর কেউ কিনছে না। কারণ সুরাটের শাড়ি বেশিরভাগ লাইলন বা প্লাস্টিকের, তা তৈরি করতে যেমন খরচ কর তেমনি শাড়ির সৌন্দর্যতা অনেক বেশি, তাই সাধারণ মানুষ সেই দিকেই আকৃষ্ট। তাঁত শিল্পীরা রাজ্য সম্মেলনে আসা প্রত্যেক মন্ত্রীদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, অবিলম্বে সুরাটের শাড়ি এ রাজ্যে আসা বন্ধ করতে হবে, না হলে তাঁত শিল্প কোনদিনই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। অন্যদিকে রাজ্যের পানি সম্পদ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ রাজ্য সম্মেলনে দাঁড়িয়ে ভেঙে দিলেন ঘুঘুর বাসা। তিনি সাফ জানিয়েছেন তাঁত সেজে তাঁত শিল্পের সাথে যারা অন্তর্ভুক্ত তাদের স্কুটিনি করা দরকার, কারণ তাঁত শিল্পের ধ্বংসের কারণ একমাত্র তারাই। তাদের চিহ্নিতকরণ করা খুবই বিশেষ প্রয়োজন।