কলকাতা, ১৬ নভেম্বর:- রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। আক্রান্তর সংখ্যার থেকেও প্রশাসন তথা সাধারণ মানুষের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে মৃত্যু হার। ডেঙ্গিতে এবার এত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে কেন রাজ্য সরকার তা খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিচ্ছে। ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন জেলা নিয়ে তিনটি পর্যায়ে বৈঠকে বসবেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। ২১ নভেম্বর রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বৈঠকে তাকে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। পাশাপাশি ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য বুধবার ১৪ দফার অ্যাডভাইসরি প্রকাশ করেছে। এদিন সমস্ত হাসপাতালের সুপার এবং জেলাগুলির স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তারা। সেই বৈঠকে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এই অ্যাডভাইসরির কথা জানানো হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, ওই অ্যাডভাইসরিতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গি রোগীদের জন্য ২৪ ঘণ্টার ল্যাব পরিষেবা চালু রাখতে বলা হয়েছে।
সেইসঙ্গে রাজ্যের সবকটি ফিভার ক্লিনিক পুরোপুরি চালু রাখা এবং জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি রেজিস্ট্রার রাখতে বলা হয়েছে। প্লেটলেট এবং রক্তের অন্যান্য পরিষেবা পেতে যাতে সমস্যা না হয়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। সন্দেহভাজন ডেঙ্গি রোগীদের রক্তের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট যাতে দিনে দিনেই পাওয়া যায়, সেকথাও বলা হয়েছে ওই অ্যাডভাইসরিতে। এছাড়া, হাসপাতাল চত্বর নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখা, প্রতিদিন ডেঙ্গি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই মরশুমে এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। বেলেঘাটা আইডিতে শুশ্রুষার জন্য অনেকে ভর্তি রয়েছেন। সেখানকারই এক উচ্চ পদস্থ কর্তার কিছু দিন আগে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়। ডেঙ্গি এবার শুধু কলকাতা ও লাগোয়া শহরতলিতে সীমাবদ্ধ নেই। মুর্শিদাবাদ, মালদহের মতো জেলাগুলিতে ব্যাপক আকারে ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলাতেও এবছর ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই সপ্তাহে রাজারহাটে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। কলকাতা পুরসভা এলাকার ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডে কিছু দিন আগে একজনের মৃত্যু হয়েছে।