এই মুহূর্তে জেলা

২০১৪ সালে স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করলো শ্রীরামপুর মহকুমা আদালত।

হুগলি, ২৪ আগস্ট:- ২০১৪ সালে কোন্নগরে স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী শংকর রুইদাসকে দোষী সাব্যস্ত করলো শ্রীরামপুর মহকুমা আদালত। আদালত সূত্রে জানা যায় মতা স্ত্রীর নাম শিবানী রুইদাস। বাড়ি কোন্নগরের ক্রাইপার রোডে। ২০০৪ সালে ক্রাইপার বাসিন্দা শংকর রুইদাসের সঙ্গে শিবানীর বিয়ে হয়। ওই দম্পতির পরবর্তীকালে একটি কন্যা ও একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের বছর পাঁচেক পর থেকে মদ খাওয়াকে কেন্দ্র করে স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতি হয়। প্রায়শই স্বামী মদ খাওয়ার জন্য স্ত্রীর কাছে টাকা দাবি করলে অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালের জুলাই মাসে শিবানী তার সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়িতে এসে ওঠেন। সেখানেও নিস্তার পান নি শিবানী। মাঝেমধ্যেই বাপের বাড়িতে হাজির হয়ে স্বামী মদ খাওয়ার জন্য টাকা চাওয়া নিয়ে ঝামেলা করত। ওই বছরই ৫ নভেম্বর সকালে মদ্যপ অবস্থায় স্বামী শংকর শিবানীর বাপের বাড়িতে হাজির হয়। মদ খাওয়ার জন্য টাকা দাবি করলে অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। স্ত্রীকে রীতিমত মারধর করে স্বামী। নিজেকে বাঁচাতে শিবানী বাপের বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তা দিয়ে দৌড়াতে থাকে। শংকর ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলে।

তারপর তাকে ছুরি দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে পালিয়ে যায় শংকর। গুরুতর জখম অবস্থায় পরিবারের লোকজন শিবানীকে উদ্ধার করে প্রথমে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিন মারা যান শিবানী। এরপরই মৃতার ভাই প্রশান্ত রুইদাস উত্তরপাড়া থানায় একটি খুনের অভিযোগ দায়ের করেন শংকরের বিরুদ্ধে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ খুনের অভিযোগে শংকরকে গ্রেফতার করে। সেই মামলায় বুধবার আদালত শংকরকে দোষী সাব্যস্ত করে এই খুনের ঘটনায় সেই সময় শিবানীর ১০ বছরের মেয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ছিল। সে এই মামলায় সাক্ষ্য দেয়। এই মামলায় সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানান দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর এদিন বিচারক মনোজ কুমার রাই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অভিযুক্তকে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। তিনি আরো জানান মৃতার পরিবার দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর বিচার পেয়েছেন। শিবানীর ভাই ও মা মেয়ের খুনী দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় খুশি। তাদের আবেদন এরকম নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত শংকর রুইদাসকে যেন যাবজ্জীবন সাজায় দণ্ডিত করা হয়।