কলকাতা, ১৭ মে:- আয় বাড়াতে সরকারের বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কাছে থাকা বাড়তি জমি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে আগেই। সেই উদ্যোগে শামিল হয়ে এবার রাজ্যের সেচ দফতর নিজেদের পড়ে থাকা জমিকে পর্যটনের কাজে লাগাতে উদ্যোগ নিচ্ছে। রাজ্যের কোথায় কোথায় দফতরের অব্যবহৃত জমি পড়ে রয়েছে, তার রিপোর্ট তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। এমনিতে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প খাতে রাজ্যের প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়। সাধারণ মানুষের সামাজিক ও আর্থিক উন্নয়নের কথা ভেবে নানা ধরনের প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে সেচ দপ্তরকে স্বাবলম্বী করতে পারলে আর্থিক অনটনের মুখে পড়তে হবে না। তাই অব্যবহৃত জমিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে। দুর্গাপুর ব্যারেজের দু’ধারে সেচ দপ্তরের প্রচুর জমি আছে। এই জমি দপ্তরের নিজস্ব। তাই ঠিক হয়েছে, তা পর্যটনের কাজে ব্যবহার করা হবে।
এই জমিতে সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে। জমিটি ইকো পার্কের মতো সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেখানে হোম স্টের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। সপ্তাহ শেষের ছুটিতে ঘুরে যেতে পারবেন ভ্রমণপিপাসুরা। এর ফলে দপ্তরের আয়ও হবে। শুধু দুর্গাপুর নয়, অনেক ব্যারেজের দু’পাশেই এভাবে পর্যটন কেন্দ্র করা যেতে পারে বলে মনে করছে সেচ দপ্তর। এছাড়াও নবান্ন সূত্রে খবর, বিভিন্ন জেলায় সরকারি জমিতে অবৈধ নির্মাণ গজিয়ে ওঠার কারণে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে সমস্যা হচ্ছে। অবৈধ নির্মাণের কারণে রাস্তা সম্প্রসারণ, বিভিন্ন সরকারি নির্মাণের কাজ ব্যহত হচ্ছে। সেই কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ সরকারি উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই সংক্রান্ত অভিযোগ ছিল সরকারের কাছে।
যা নিয়ে কঠোর সিদ্ধান্তের পথে হেঁটেছে সরকার। বাম আমলে ২০১০ সালে প্রকাশিত হওয়া সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী “সরকারি জমিতে কোনও অবৈধ নির্মাণকে অনুমোদন দেবে না সরকার। রাজ্য, সরকারি দফতর এবং পঞ্চায়েত বা পৌরসভাগুলির মত স্থানীয় প্রশাসনিক সংস্থাগুলিকে এই ধরনের নির্মাণ রুখতে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ একবার নির্মাণ হয়ে গেলে জনগণ তা গ্রহণ করে নেবে। যে সরকারি বিভাগে জমি, সংশ্লিষ্ট বিভাগকেই ওই জমি খালি করার দায়িত্ব নিতে হবে।” সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, এই নির্মাণগুলির যদি কোনও উপযুক্ত কারণ না থাকে তবে নির্মাণগুলি ভেঙে ফেলা হবে। বাম আমলে নেওয়া সেই নীতিকে মান্যতা দিয়েই নবান্নের তরফে জেলাশাসকদের কাছে এই নির্দেশিকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নির্দেশিকা প্রতিলিপি রাজ্য পুলিশের ডিজি ও আইজিকে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের শীর্ষকর্তাদের সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ সুপারদের সরকারি জমি দখলমুক্ত করার জন্য জেলাশাসকদের সাহায্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।