এই মুহূর্তে জেলা

জটিল অস্ত্রপচারের একদিন বাদেই বেডে শুয়ে পরীক্ষা দিলো উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।

হুগলি, ২২ এপ্রিল:- জটিল অস্ত্রপচারের একদিন বাদেই নার্সিংহোমের বেডে শুয়ে পরীক্ষা দিলো উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার্থীর নাম মাম্পি কুন্ডু। সে এই বছর গুপ্তিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। গত ১৩ এপ্রিল সাইকেলে করে প্রাইভেট টিউটরের বাড়ি পড়তে যাওয়ার পথে উল্টো দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম অবস্থায় মাম্পিকে স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার পর বাড়ি নিয়ে আসা হয়। তাকে বেশ কিছু পরীক্ষা করতে বলা হয়। এরকম পরিস্থিতিতে সে স্কুলে গিয়ে উচ্চমাধ্যমিকের আরও দুটি পরীক্ষা দেয়। কিন্তু যখন ডান পায়ের যন্ত্রণা মাত্রাছাড়া পর্যায়ে পৌঁছায়।

ইতিমধ্যে ১৯ এপ্রিল এক্সরে রিপোর্ট আসার পর দেখা যায় তার ডান পায়ের থাই বোন ভেঙে টুকরো হয়ে গেছে। সেই দিনই তাকে চন্দননগরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। পরের দিন সন্ধ্যায় এক জটিল অস্ত্রপচারের মধ্যে দিয়ে তার ডান পায়ে প্লেট বসান ডাক্তার ভাস্কর দাস। তখনো কেউ ভাবতে পারেনি যে অস্ত্রোপচারের একদিন বাদে মাম্পি সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে নার্সিংহোমের বেডে শুয়ে পরীক্ষা দেবে। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে মাম্পি এই বিষয়ে ডাক্তার ভাস্কর দাস জানান মাম্পির যে হাড় ভেঙেছে সেই হার শরীরের সবচেয়ে বড় ও শক্ত হাড়। এই হাড় ভেঙে গেলে শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। কিন্তু মাম্পির ইচ্ছা শক্তির কাছে সব হার মেনেছে। তিনি আরো বলেন ওর জীবনে একটা বছর যে থেমে যায়নি

এবং সেই ব্যাপারে তারা যে তাকে সাহায্য করতে পেরেছেন এটাতেই তারা খুশি। অন্যদিকে গুপ্তিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান মাম্পি পড়াশোনায় ভালো। অপারেশন হওয়ার পর মাম্পি যে পরীক্ষা দিতে পারবে এটা তারা ভাবতে পারেন নি। মাম্পির পরীক্ষা দেওয়ার এ ব্যাপারে অদম্য ইচ্ছা দেখে তিনি কাউন্সিল ও কৃষ্ণভাবিনী গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাদের সহযোগিতায় শেষ পর্যন্ত নার্সিংহোম থেকে মাম্পির পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। একটা বড় অস্ত্রোপচারের পর যেভাবে মাম্পি পরীক্ষা দিয়েছে তাকে তার জন্য স্যালুট জানিয়েছেন চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা সকলেই।