এই মুহূর্তে জেলা

প্রয়াত সুরজিৎ, কিংবদন্তির প্রয়ানে শোকস্তব্ধ কেওটা লাটবাগান।

সুদীপ দাস, ১৭ ফেব্রুয়ারি:- চুঁচুড়ার সাহাগঞ্জ কেওটা লাটবাগানে ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি সুরজিৎ সেনগুপ্তের বাড়ি। সেই বাড়িতে বর্তমানে দাদা-বৌদি থাকলেও প্রতি মাসে আসতেন সুরজিৎবাবু। হুগলি জেলার ফুটবল থেকে উঠে আসা তাঁর। অশ্বিনী বরাট (ভোলা দা) ছিলেন তাঁর কোচ। ভোলা দার কোচিং-এ হুগলী ব্রাঞ্চ স্কুলের মাঠে দীর্ঘদিন খেলেছেন তিনি। তিনিই কলকাতায় পাঠিয়েছিলেন সুরজিৎকে। কলকাতা লিগের লোয়ার ডিভিশন ক্লাব রবার্ট হাডসন প্রথম সই করেন। ১৯৭০ সালে সেখান থেকে খিদিরপুরে যান বাঙালি উইঙ্গার। ওই বছর খিদিরপুর ছেড়ে ইস্টবেঙ্গলে চলে যান স্বপন সেনগুপ্ত। তাঁর বদলে সুরজিৎকে নেওয়া হয়। কোচ অচ্যুত্‍ ব্যানার্জির কোচিংই তাঁকে পাল্টে দিয়েছিল। ৭১ সাল পর্যন্ত খিদিরপুরেই খেলেন। ১৯৭২-৭৩ মরসুমে মোহনবাগানে সই করেন। দুটো মরসুম খেলেছিলেন সবুজ মেরুন জার্সিতে। সেখান থেকে ১৯৭৪ সালে পা দেন ইস্টবেঙ্গলে। আর পিছন ফিরে দেখতে হয়নি তাঁকে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব থেকেই সাফল্যের শিখরে উঠে পড়েন। সাতের দশকের ময়দানে অনেক কারণে সুরজিৎ নায়ক হয়ে উঠেছিলেন। রাইট উইংয়ের প্লেয়ার। কিন্তু লেফট উইংয়েও খেলেছেন।


There is no slider selected or the slider was deleted.

উইং থেকে সতীর্থদের জন্য গোলের ঠিকানা লেখা পাস বাড়াতেন। দু’পায়ে জোরাল শট ছিল। উইথ দ্য রান ড্রিবলে ছিলেন পারদর্শী। দর্শনীয় গোলের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। বেশ কয়েকবার কর্নার থেকেই গোল করেছিলেন। এ সবই তাঁকে শিল্পী করে তুলেছিল। খেলাধুলার পাশাপাশি সঙ্গীতের দিকেও যথেষ্ট আগ্রহ ছিলো সুরজিত বাবুর। কেওটা লাটবাগানে বাড়ির সামনে শুক্রবার সন্ধ্যায় দেখা গেলো থিকথিকে ভিড়। দাদার শরীর খারাপ। প্রিয় ভাইয়ের মৃত্যুর খবর সহ্য করতে পারবেন না। তাই এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত দাদাকে কিছুই জানাননি বৌদি। ছেলেকে কোলকাতায় কাকার অন্ত্যেষ্টিতে পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। ১৯৮০ সাল সুরজিৎ সেনগুপ্তের কেরিয়ারে তো বটেই, ময়দানের ফুটবলেও এক যুগন্তকারী সময়। সুরজিতের নেতৃত্বে একঝাঁক ফুটবলার দুই প্রধান ছেড়ে মহমেডানে সই করেন। শুধু বিপ্লব করাই নয়, সুরজিৎরা ওই বছর মহমেডানকে কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়নও করেছিলেন। যা এখনও ভোলেননি ময়দানের প্রবীণরা। ১৯৮১ সালে আবার মোহনবাগানে ফেরেন। ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত খেলার পর অবসর নিয়ে নেন। দু’বছর পর আবার অবসর ভেঙে ফেরেন সুরজিৎ। সে বার জর্জ টেলিগ্রাফের কোচ হয়েছিলেন সুভাষ ভৌমিক। তাঁরই অনুরোধে জর্জে সই করেন। দিন পনেরো আগে সেই সুভাষ মারা গিয়েছেন। তাঁরই এক সময়ের সতীর্থ ও ফুটবলার সুরজিৎও চলে গেলেন।

There is no slider selected or the slider was deleted.