কলকাতা, ১৬ জানুয়ারি:- একশো দিনের প্রকল্প এবং আবাস যোজনার কাজ সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।সাফল্যের নিরিখে এই দুই প্রকল্পের ক্ষেত্রেই শীর্ষে রয়েছে বাংলা। মিলেছে কেন্দ্রের স্বীকৃতিও। এবার ফের একবার রাজ্যে ওই দুই প্রকল্পের সাফল্য খতিয়ে দেখতে দল পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। সোমবারই সেই প্রতিনিধি দল আসছে রাজ্যে। ৮টি দলে ভাগ হয়ে তাঁরা ১৬টি জেলা পরিদর্শন করবেন। সোমবার থেকে শুরু করে শনিবার পর্যন্ত এই পরিদর্শন চলবে। এই ১৬টি জেলার প্রতিটিতে তাঁরা ৩-৪টি করে ব্লকে যাবেন ও সেখানকার ১০-১২টি করে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ঘুরে দেখবেন। গত দুই বছরে ১০০ দিনের প্রকল্পে কী-কী হয়েছে এবং আবাস যোজনার কাজ নিয়ম মেনে হয়েছে কিনা সেটাই খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। তবে এই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল যে শুধু বাংলাতেই আসছেন তা নয়, দেশের ১০০টি জেলায় ওই দুই প্রকল্পের কাজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সেই ১০০টি জেলার মধ্যে রয়েছে বাংলার ১৬টি জেলাও। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব আশিসকুমার গোয়েল বৃহস্পতিবার রাজ্যের ১৬টি জেলার জেলাশাসকদের চিঠি দিয়ে ‘ন্যাশনাল লেভেল মনিটর’দের রাজ্য সফরের বিষয়টি জানিয়েছেন। বাংলার যে ১৬টি জেলায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল যাবেন সেই জেলাগুলি হল দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার। কোভিড পূর্ব কালে ২০১৯-এর শেষ দিকে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল এসে সেই সময়ে পূর্ব বর্ধমান ও হুগলিতে ১০০ দিনের কাজ দেখে গিয়েছিল।
সেই সফর ও পরিদর্শনকালে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজের ক্ষেত্রে ‘অনিয়ম’ খুঁজে পেয়েছিল। সেই নিয়ে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে রিপোর্টও করেন তাঁরা। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতকে টাকা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি সেই সময়ে রাজ্য প্রশাসন ওই সব গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করেছিল। এবারে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল আবারও আসছেন দুই প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে। এখন দেখার বিষয় পরিদর্শন শেষ করে তাঁরা কেন্দ্র ও রাজ্যকে কী রিপোর্ট দেন। যদিও রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী পুলক রায় জানিয়েছেন, ‘সারা দেশের ১০০টি জেলায় কেন্দ্রের দল পর্যবেক্ষণ করতে যাচ্ছে। আমাদের রাজ্যেও আটটি দল ১৬টি জেলায় যাবে। একদম রুটিনমাফিক আসছেন ওঁরা। এই নিয়ে চিন্তার কিছুই নেই। যে সব গ্রাম পঞ্চায়েতে তাঁরা যাবেন সেই সব পঞ্চায়েতকে গত দু’বছরের প্রকল্পের কাজের সব নথি ঠিক করে রাখতে বলা হয়েছে। প্রকল্পের কাজের সব রসিদ, ‘ক্যাশবুক’ থেকে সাতটি ‘রেজিস্টার’ যথাযথ ভাবে পূরণ করে রাখার জন্য পঞ্চায়েতগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে প্রকল্পে কাজ চলছে, সেখানে যাতে কাজের নাম, বরাদ্দ, কাজের বিবরণ-সহ বোর্ড টাঙানো থাকে, তা-ও সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ বা ‘বাংলা আবাস যোজনা’য় ২১০ বর্গফুটের মধ্যে বাড়ি করার নিয়ম, তা মানা হয়েছে কি না, ‘যোগ্য’ প্রাপক বাড়ি পেয়েছেন কি না, ‘জিও ট্যাগিং’ যথাযথ হয়েছে কি না কিংবা বাড়ির বাইরে ‘লোগো’ দেওয়া বোর্ড ঠিকঠাক ভাবে লাগাতে বলা হয়েছে।’