এই মুহূর্তে জেলা

চুঁচুড়ায় বিষ্ণু মাল খুনে আজ থেকে শুরু হলো সাক্ষ্য।

সুদীপ দাস, ২৯ নভেম্বর:- ত্রিকোণ প্রেমের জেরে গত বছরে দূর্গা উৎসবের ঠিক প্রাক-কালেই ১১ই অক্টোবর চুঁচুড়া শহরের জনবহুল এলাকা রায়ের-বেড় থেকে ২৩ বছরের নিরীহ যুবক বিষ্ণু মাল কে, তাঁরই বাড়ির সামনে থেকে মোটর-বাইকে করে তুলেনিয়ে যায় হুগলির কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশাল দাস ও তাঁর সাগরেদ রা। সেই রাত্রেই চাঁপদানি এলাকায় একটি বাড়িতে তুলে নিয়ে আসা বিষ্ণু কে নৃশংসভাবে হত্যা করে বিশাল। এবং তাঁর দেহ কে ৬ টুকরো করাহয়। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকা সকল অপরাধী কে পরবর্তী কালে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশি জেরায় বিশাল সহ এই নৃশংস হত্যাকান্ডে যুক্ত থাকা সকল দুষ্কৃতিই তাঁদের এই দুষ্কর্ম্মের কথা স্বীকার করে এবং বিষ্ণু র দেহের খন্ডিত অংশ কোথায় কোথায় আছে তাঁর সন্ধান দেয়। পুলিশ বিষ্ণু র সেই খন্ডিত দেহাংশের সকল অঙ্গ উদ্ধার করলেও, বিশাল কে না ধরা অব্দি তাঁর কাটা মুন্ডু বা মাথার সন্ধান পায়নি। ক্যানিং এর জীবনতলা থানা থেকে “বিশাল ধরা পড়লে তাকে নিয়ে আসা হয় চুঁচুড়া থানায় এবং এখানেই সে সন্ধান দেয় বিষ্ণু র কাটা মাথা কোথায় পতিত আছে, তারপর ভদ্রেশ্বরর খালের ধার থেকে প্লাস্টিকে মোড়ানো অবস্থায় বিষ্ণু র কাটা মাথা উদ্ধার করে চুঁচুড়া পুলিশ। চুঁচুড়া শহরের সমস্ত স্তরের মানুষ ই এই নারকীয় হত্যার নিন্দা জানায় প্রথম দিন থেকেই।

যতবারই দুষ্কৃতি বিশাল দাস ও তাঁর সাগরেদদের জেলা আদালতে তোলা হয় ততবারই সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ প্রতিবাদে সরব হয়, সকলেই এই নারকীয় হত্যার দোষী ব্যক্তি দের ফাঁসির দাবী জানায়। সোমবার বিষ্ণুর হত্যাকারী বিশাল দাস সহ তার সাগরেদ দের চুঁচুড়া আদালতে তোলা হয়। মূল অভিযুক্ত বিশাল সহ মোট ৮জনকে এদিন ফার্স্ট ফাস্ট ট্রাক কোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারপতি কাজি আবুল হাসেমের এজলাসে তোলা হয়। এদিন থেকেই এই মামলার স্বাক্ষ্য প্রমান শুরু হলো। মামলায় মোট ৫৫জন স্বাক্ষী রয়েছে বলে আইনজীবি সূত্রে খবর। সোমবার বিষ্ণুর দুই বন্ধু যারা ঘটনার দিন বিষ্ণুকে বিশালের গাড়ি করে যেতে দেখেছেন তাঁরা স্বাক্ষ্য দেয়। এদিনও আদালতের সামনে সকাল থেকেই শান্তিপূর্ন অবস্থানে ছিলো বিষ্ণুর পরিবার সহ অসংখ্য সাধারন মানুষ। দোষীদের ফাঁসির দাবীতে তাঁরা আদালত চত্বরে একটি মৌন মিছিলও করে। দুপুর আড়াইটা নাগাদ প্রিজন ভ্যানে চেপে নিয়ে আসা হয় এই মামলায় ৮ অভিযুক্তকে। ফাস্ট ট্রাক কোর্টের সামনে তখন বিশাল পুলিশ বাহিনী। থিকথিকে ভিড় সাধারন মানুষেরও। প্রিজন ভ্যান থেকে ৮জনের মধ্যে এক এক করে পুলিশি ঘেরাটোপে অভিযুক্তদের এজলাসের ভিতর ঢোকানো হয়। সাদা জামা-নীল জিন্স পরে ৭নম্বরে বেড়িয়ে আসে মূল অভিযুক্ত বিশাল দাস। অবস্থানকারীদের দাবী আমরা বিষ্ণুর খুনিদের সাজা দেখতে চাই। যারা আমাদের একমাত্র পুত্রের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তাদের সকল কে যেন ফাঁসি কাঠে ঝোলানো হয়। যাতে এই ধরনের নৃশংস ঘটনা সমাজে আর না ঘটে।