এই মুহূর্তে জেলা

স্বর্গবাসের পর ২য় ডোজের শংসাপত্র, মৃত মাকে ফেরানোর আর্জি ছেলের!

সুদীপ দাস, ২১ নভেম্বর:- সরকারি খাতায় কোভিডে মৃত্যু হয়েছে মায়ের। যার শংসাপত্রও রয়েছে ছেলের হাতে। মৃত্যুর মাসখানেক আগে কোভিডের প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন ওই প্রৌঢ়া। কিন্তু সেই মৃত মায়েরই ২য় ডোজের শংসাপত্রও চলে এলো ছেলের হাতে! তবে কি মা বেঁচে রয়েছেন? অসম্ভব হলেও মাঝে মাঝেই নিজের বিবেককে এ প্রশ্নই করছেন ছেলে! আর তা থেকেই সরকারের কাছে মৃত মাকে ফিরিয়ে দেওয়ার করুন আর্জি ছেলের। ভ্যাকসিন বিভ্রাটের ফাঁপড়ে পরে এখন এমনই অবস্থা হুগলীর ডানকুনি থানার দক্ষিন সুভাষ পল্লীর বাসিন্দা বিলাস দাসের। বিলাসবাবুর মা স্বর্গীয় সরস্বতী দাস কোভিড টিকার প্রথম ডোজ নেন চলতি বছরের ২২শে মার্চ। মাসখানেক পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পরেনন। বিলাসবাবু মাকে বুকে ব্যাথার উপসর্গ নিয়ে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরীক্ষায় কোভিড ধরা পরে সরস্বতী দেবীর। গত এপ্রিলের ২৯ তারিখ সেই হাসপাতালেই মারা যান তিনি। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী প্রশাসনই সরস্বতী দেবীর মৃতদেহ দাহ করেন। দিন পনেরো পর মায়ের মৃত্যুর শংসাপত্রও তুলে নেন বিলাসবাবু। মায়ের মোবাইল নম্বরটি আপাতত বিলাসবাবু নিজের কাছেই সচল রেখেছেন। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিলো। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই সরস্বতীদেবীর ২য় ডোজ নেওয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে বিলাসবাবুর মোবাইলে মেসেজ আসে।

সত্যি কি না যাচাই করতে তড়িঘড়ি তিনি কো-উইন অ্যাপ খুলে দেখেন সত্যিই তো! শনিবার না কি মৃত মা চন্ডীতলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ২য় ডোজ নিয়েছেন। অবাক করা সেই শংসাপত্রের প্রিন্ট আউট বের করেন বিলাসবাবু। বিলাসবাবুর এখন প্রশ্ন। মৃত মা ২য় ডোজ নিলেন কিভাবে? তাহলে কি মা বেঁচে রয়েছেন। সত্যিই যদি বেঁচে থাকেন তাহলে সরকারের কাছে মাকে ফিরিয়ে দেওয়ার করুন আর্জি জানান বিলাসবাবু! এখন প্রশ্ন হল এ কেমন বিভ্রাট? সরস্বতী দেবী নয় মারা গেছেন। যদি সত্যিই ২য় ডোজ নেওয়ার আগে কোন জীবিত মানুষের ক্ষেত্রে এমন হতো। তাহলে তো তিনি দেশের কোথাও ২য় ডোজ নেওয়ার সুযোগ পেতো না! কার গাফিলতি? বিজেপির বক্তব্য আমরা বারংবার এই রাজ্যে ভ্যাকসিন দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ করেছি। বিজেপির ডানকুনি মন্ডলের সাধারন সম্পাদক গুঞ্জন চক্রবর্তী বলেন একজন মৃত মানুষের নামে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে গেল! এটা ভ্যাকসিন দুর্নীতি ছাড়া কি? অন্যদিকে এবিষয়ে হুগলী জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য সুবীর মুখার্জী বলেন ভূল তো অবশ্যই হয়েছে। আমি এবিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের সাথে কথা বলবো। তবে এর সাথে দুর্নীতির কোন যোগ নেই।