মহেশ্বর চক্রবর্তী, ৩ নভেম্বর:- আজ সমারোহে পুজিত হচ্ছে মাকালী। মা কালীর পুজো নিয়ে নানান ইতিহাস লক্ষ্য করা যায়। ইতিহাসের পাতা থেকে বাদ যায়নি হুগলির আরামবাগ ব্লকের কেশবপুরের মুখার্জি বাড়ির মা কালীর পুজো। এখন মুখার্জি বাড়ির পুজোতে এখন সাজ সাজ রব। এই পূজাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় গ্রামবাসীরা আনন্দ ও উৎসবে মুখরিত হয়ে ওঠেন। এই পূজাটির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৪২ দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে। কিন্তু এই পুজোর একটা ইতিহাস আছে। এইখানে মা সিদ্ধেশ্বরী মূর্তিতে পূজিত হন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, কেশবপুরের মুখার্জি পরিবারের পূর্ব পুরুষেরা নৈহাটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন। কথিত আছে যে সেই সময়ে নৈহাটিতে বসবাস করার সময় বাড়ি বন্ধক রেখে তীর্থ করতে গিয়েছিলেন, মুখার্জি পরিবারের সদস্য কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়। তিনি তীর্থ থেকে ফিরে এসে বন্ধক রাখা বাড়ি আর ছাড়াতে পারেনি। এরপর তিনি ঘুরতে ঘুরতে চলে আসেন হুগলির আরামবাগ ব্লকের কেশবপুর অঞ্চলে। সেই সময় ওইখানে একটি চায়ের দোকান করেন প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়।
সেখানেই একটা ছোট্ট চায়ের দোকান করে জীবন যাপন করতেন। পাশেই থাকতো এক বড়াল গিন্নি। সে সময়ে চায়ের দোকানে চা খেতে আসতেন গ্রামের বহু মানুষ। নাম হয়ে যায় মুখার্জি’র চায়ের দোকান। আরো জানতে পারা যায় যে, সেই সময় এলাকার স্থানীয় মানুষেরা বলেন, কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় কে বড়াল গিন্নির এক নাতনি আছে, তুমি তাকে বিয়ে করতে পারো। বিয়ে করে এখানকার বাসিন্দা হয়ে যাও। এরপর বড়াল গিন্নি তার নাতনির সাথে বিয়ে দেন নৈহাটি থেকে আসা কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। এবং আরও জানতে পারা যায় যে, সেই সময় বড়াল গিন্নি বলেন, আমার নাতনিকে বিয়ে করলে মায়ের মন্দিরে পুজো করার দায়িত্ব তোমাকে দেব। এরপর বড়াল গিন্নির নাতনির সাথে কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের বিবাহ হয়। সেই থেকেই মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বর্তমানে ওই মন্দিরে পুজো করেন পুরোহিত কৃষ্ণচন্দ্র মুখার্জি। সূত্রে জানা যায় যে, এই কেশবপুরের মুখার্জী বাড়ির পুজো ছাড়া ওই গ্রামে আর কোন মা কালীর পুজো অনুষ্ঠিত হয় না। এই পূজাকে কেন্দ্র করে কেশবপুর গ্রামের মানুষেরা আনন্দে মেতে ওঠেন।