সুদীপ দাস, ২৪ অক্টোবর:- করোনার কোপ চন্দননগরের আলোক শিল্পে পরেছিল অনেক আগেই, একের পর এক পুজো বাতিল অথবা ছোট হতে হতে, আলোক শিল্পের চাহিদা তলানিতে এসে ঠেকছিল। তবে চন্দননগরের আলোকশিল্পীরা, সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন, যে পুজোটিকে কেন্দ্র করে, তা হলো এখানকারই জগদ্ধাত্রী পুজো। এই জগদ্ধাত্রী পুজোতেই তারা তাদের শ্রেষ্ট আলোর কারসাজি তুলে ধরে মণ্ডপ ও শোভাযাত্রায়। আর সেই আলো দেখেই আকৃষ্ট হয় পুজো উদ্যোক্তারা, পরের বছর পুজোর জন্য বায়না শুরু হয়ে যায় এই পূজার পর থেকেই। করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় লকডাউন। চায়না থেকে সস্তার এলইডি আলো আসা বন্ধ হয়ে যায়।
স্বাভাবিক ভাবেই নতুন আলো তৈরি করা অনেকটাই পিছিয়ে যায়। আনলক পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকে এখানকার শিল্পীরা আশায় বুক বেঁধেছিল, কিন্তু দুর্গা পুজোয় সেই আশায় অনেকটাই ব্যাঘাত ঘটেছিল কোর্টের অর্ডারে, আর সেখান থেকেই পুরোপুরি অন্ধকার নেমে এলো জগদ্ধাত্রী পুজোতেও। দুর্গা পুজো মিটতেই শুরু হয়েছে কড়াকড়ি। আবারও শুরু হয়েছে নাইট কার্ফু। তবে এমনিতেই নয়, সত্যিই যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। হুগলী জেলার পৌর এলাকাগুলির মধ্যে সবথেকে বেশী ১৬টি ওয়ার্ডকে বর্তমানে কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষনা করেছে জেলা প্রশাসন। তাই জগদ্ধাত্রী পুজো সামনে এলেও হাসি নেই চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের মুখে।
ইতিমধ্যে বেশকিছু পুজো কমিটিও নিজেদের বাজেটে কাটছাট শুরু করে দিয়েছে। তাই আশাহীন হয়ে পরছে আলোকশিল্পীরা। চন্দননগরের প্রখ্যাত আলোকশিল্পী বাবু পালের কথায় দুর্গা পুজোয় চন্দননগরের কিছু আলো কোলকাতায় গেলেও তুলনায় অনেক কম। চন্দননগরের ছোট-বড় সব আলোকশিল্পীরাই জগদ্ধাত্রী পুজোয় কাজ করেন। কিন্তু গতবছর থেকে সেই কাজে ভাটা পরেছে। বিশেষ করে ছোট-ছোট আলোকশিল্পীরা অনেকেই কাজ পাননি। চন্দননগর আলোকশিল্পীদের তাই জগদ্ধাত্রী মায়ের কাছে আমাদের প্রার্থনা আবার সবকিছু স্বাভাবিক করো! চন্দননগরে আবার ঐতিহ্যের আলো ফেরাও মা!