কলকাতা, ৪ অক্টোবর:- রাজ্যের অশক্ত বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং শয্যাশায়ী রোগীদের পাশে দাঁড়াতে একটি অভিনব প্রকল্প শুরু করতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। গোটা দেশের মধ্যে প্রথমে এই রাজ্যেই সরকারি উদ্যোগে তাদের জন্য প্রশিক্ষিত সেবাকর্মী সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুজোর পরেই পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে রাজ্যের চারটি ব্লকে ‘সেবা সখি’ নামে এই প্রকল্প চালু হয়ে যাবে। রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীনে গ্রামীণ জীবিকা মিশনের আওতায় আনন্দধারা কর্মসূচিতে সেবা কর্মীদের প্রশিক্ষণের এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ওই দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে প্রথম পর্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর, উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাট, পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া এবং হাওড়া আমতা ব্লকে এই প্রকল্প রূপায়ণ করা হবে। প্রথম পর্বে এই প্রতিটি ব্লকের ২০ জন মহিলাকে বেছে নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণের জন্য ইনস্টিটিউট অফ জেরন্টোলজি বিশেষ প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করেছে।
এক মাসের ওই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সংশ্লিষ্ট মহিলাদের এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে তারা শয্যাশায়ী রোগীদের উপযুক্ত যত্ন নিতে পারেন। প্রাথমিক চিকিৎসা, ওষুধপত্র সম্পর্কে ধারণা, ব্লাড প্রেশার, হৃদ রোগ, ডায়াবেটিসের মত সাধারণ বয়স্কদের মধ্যে চেনা শারীরিক সমস্যায় প্রয়োজনীয় সেবা যত্ন সম্পর্কে তাদের বিশেষ হবে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। একমাত্র শহর লাগোয়া গ্রাম এলাকার বাসিন্দাদের এই কর্মসূচিতে প্রশিক্ষণের জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে। কারণ শহরাঞ্চলে একাকী বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি যাদের যত্ন নেওয়ার কেউ নেই। আবার রাজারহাটের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা মহিলারা সহজেই নিউটাউন বা বিধান নগরে গিয়ে কাজ করতে পারবেন। একইরকম ভাবে বারুইপুরের বাসিন্দাদের পক্ষে কলকাতায় গিয়ে কাজ করা অনেক বেশি সহজ। তাদের দৈনন্দিন পারিশ্রমিক নির্ধারিত করে দেবে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর। যার খরচ বেসরকারি ইয়াবা নার্সিং সেন্টার থেকে কিছুটা কম রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। সেবা কর্মীদের গ্রামাঞ্চলে প্রতিদিন ২৫৫ টাকা এবং শহরাঞ্চলে ৩০০ টাকা করে পারিশ্রমিক ধার্য করা হয়েছে। এই প্রকল্প চালু হলে একদিকে যেমন শহরাঞ্চলের একাকী বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপকৃত হবেন তেমনি গ্রামাঞ্চলের বহু মহিলার সামনে রোজগারের নতুন পথ খুলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।