এই মুহূর্তে কলকাতা

ভবানীপুরে নিজের রেকর্ড ভাঙ্গার পাশাপাশি জয়ের হ্যাটট্রিক করলেন মমতা।

কলকাতা, ৩ অক্টোবর:- ভবানীপুর কেন্দ্রে জয়ের হ্যাটট্রিক গড়লেন মমতা। জয়ী হলেন ৫৮ হাজার ৮৩৫ ভোটের ব্যবধানে। গড়লেন রেকর্ডও। ২০১১ সালে নিজের জয়ের ব্যবধানকেই ছাপিয়ে গেলেন তিনি। সেই সময় তাঁর জয়ের ব্যবধান ছিল ৫৪ হাজার ২১৩। আজ, রবিবার ভবানীপুর উপনির্বাচন সহ আজ বাংলার মোট তিন বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট গণনা ছিল। তবে এদিন সকাল থেকেই বাংলা সহ গোটা দেশের নজর ছিল ভবানীপুর কেন্দ্রের দিকে। কারণ এখানকার প্রার্থী তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, রবিবার সকাল থেকে ভোটগণনা কেন্দ্রগুলি কড়া নিরাপত্তায় মেুড়ে ফেলা হয়েছিল। গণনার প্রথম কয়েকটি রাউন্ড দেখা পরই বোঝা গিয়েছিল ফলাফল কী হতে চলেছে। তৃতীয় রাউন্ড শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এগিয়ে ছিলেন ৬১৪৬ ভোটে। এরপর সময় যতই এগিয়েছে সেই ব্যবধান আরও বেড়েছে। একাদশ রাউন্ডের গণনা শেষে ৩৩,৯৮২ ভোটে এগিয়ে যাওয়ার পর কালীঘাটে প্রার্থী মমতার বাড়িতে পৌঁছে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ রাউন্ড গণনা শেষে রেকর্ড গড়ে প্রত্যাশা মতোই জয়লাভ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জয়ের পরই সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা বলেন, ভবানীপুরের মানুষ তথা দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বর্ষা, কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও মানুষ ভোট দিতে বেরিয়েছেন এর জন্য ধন্যবাদ। এখানকার কোনও ওয়ার্ডে হারিনি। সারা বাংলা আজ ভবানীপুরের দিকে তাকিয়েছিল। তবে সব চক্রান্তকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন বাংলার মানুষ। আমি আপনাদের কাছে ঋণী। আমি জিতেছি, কিন্তু আপনাদের ভিকট্রি চিহ্ন দেখাবো না। কারণ জঙ্গিপুর এবং সামশেরগঞ্জে আমার দলের আরও দুই প্রার্থী লড়ছেন। তাঁরাও জিতছেন। তাই তাঁদের কথা মাথায় রেখে আমি থ্রি চিহ্ন দেখাবো। অন্যদিকে, আজ শান্তিপুরের প্রার্থী হিসেবে ব্রজকিশোর গোস্বামী, দিনহাটায় উদয়ন গুহ এবং খড়দহের প্রার্থী হিসেবে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করলেন তিনি। এই জয়ের পর ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘এই জয় বাংলার মানুষের জয়। নন্দীগ্রামে ঘরের মেয়ের যে অপমান হয়েছিল তার বদলা আজ ভবানীপুরের মানুষ নিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আর বাংলায় আটকে রাখা যাবে না। দেশের প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে তৃণমূল। পরবর্তী লক্ষ্য দিল্লি। বিজেপি হাটাও দেশ বাঁচাও।’ এদিন দলনেত্রীর জয়ের পরই গান গেয়ে, হাতে রং মশাল নিয়ে উৎসবে মেতে উঠলেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। গান গেয়ে দলনেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসা জানান তিনি।

এদিন তিনি আরও জানান, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এগিয়ে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আজ, মমতার জয়ের পরই তাঁকে অভিনন্দন জানান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের ব্যাপারে আমাদের মধ্যে কোনও সংশয় ছিল না। তাঁর মতো জনপ্রিয়তা বাংলা কেন ভারতের কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদেরই নেই। তিনি যেভাবে রাজ্যকে পরিচালনা করছেন সেদিকে গোটা দেশ তাকিয়ে রয়েছে। অন্যান্য রাজ্যের স্পিকাররা এলে তাঁরাও মমতা বন্দোপাধ্যায় ও তাঁর কাজের পরিকল্পনা নিয়ে খোঁজখবর নেন। এতদিন মমতা বিধানসভার সদস্য না থাকায় অনেকেই অনেক কথা বলছিলেন। কিন্তু সংবিধানের নিয়ম মেনেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। যারা মুখ্যসচিবের সমালোচনা করছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মুখ্যসচিব শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনের ভুমিকা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া আগাম সন্ত্রাসের আশঙ্কা করে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল হাইকোর্টে যাওয়ায় তাঁকে কটাক্ষ করেন তিনি। বলেন, আসলে প্রচার পেতেই এইসব করেন তাঁরা। সাধারণ মানুষ ওদের প্রত্যাখ্যান করেছেন