এই মুহূর্তে জেলা

আরামবাগের গান্ধী নামে পরিচিত প্রফুল্ল চন্দ্র সেনের শিক্ষকতা নিয়ে নানা ইতিহাস আজও চিরস্মরণীয়।

মহেশ্বর চক্রবর্তী, ৫ সেপ্টেম্বর:- বরনীয় যারা তাদের স্মরন করার, এটাই তো বিশেষ দিন। ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস। এক জন আদর্শ শিক্ষক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ (৫ই সেপ্টেম্বর, ১৮৮৮ – ১৭ই এপ্রিল, ১৯৭৫) তামিলনাডুর তিরুট্টানিতে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মদিনকে স্মরন করে সারা দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে শিক্ষক দিবস। এদিন আরামবাগের গান্ধী নামে পরিচিত প্রফুল্ল চন্দ্র সেনের শিক্ষকতা নিয়ে নানা ইতিহাস চিরস্মরণীয়। তিনি একাধারে যেমন দেশপ্রেমিক, স্বাধীনতা সংগ্রামী, গান্ধীবাদ নেতা, রাজনীতিবিদসহ নানা ভুষনে ভুষিত তেমনি শিক্ষক হিসাবে তাঁর সমাজ সেবার ভুমিকা খুবই তাৎপর্য পুর্ন। শিক্ষক হিসাবেই তিনি তার দেশসেবা শুরু করেন। ১৮৯৭ সালে বাংলাদেশের খুলনা জেলার সেনহাটিতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা গোপাল চন্দ্র সেন সরকারি প্রযুক্তিবিদ থাকায় তাকে বিহার ও পরবর্তীকালে উত্তরপ্রদেশে কাটাতে হয়। ছোট বেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র প্রফুল্ল চন্দ্র সেন প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করে স্কটিশচার্চ কলেজে ভর্তি হন। তারপর বিএসসি পাশ করার পর চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট পড়ার ইচ্ছা হওয়ায় বিলেত যাওয়ার জন্য টিকিট কাটা হয়ে যায়। কিন্তু সেই সময়ই ডাক আসে স্বদেশী আন্দোলনের। কাল বিলম্ব না করে প্রফুল্ল চন্দ্র সেন চলেন হুগলির বিদ্যামন্দিরে শিক্ষকতা করতে। সামেন একটা উজ্জ্বল ভবিষ্যৎকে পায়ের তলায় ফেলে দিয়ে শিক্ষাকতাকে ধ্যান জ্ঞান করে নিলেন।

শুধুমাত্র দেশের ছেলে মেয়েদের জাতীয়তাবোধে দীক্ষিত করে মানুষের মতো মানুষ করার জন্য। তিনি হুগলির বিদ্যামন্দিরে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি ছাত্রদের নিয়ে শুরু করলেন সমাজ সেবার কাজ।ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে সারা হুগলি জেলা ব্যাপী একদিকে চললো স্বদেশী আন্দোলনের কাজ অন্যদিকে পড়াশোনা পাশাপাশি সমাজ উন্নয়নের কাজ।জানা গিয়েছে হুগলি বিদ্যামন্দিরে সেই সময় শিক্ষক হিসাবে যোগদান করে নরেন সেন, ডাঃ অবনি চ্যাটার্জী, বিধু চ্যাটার্জী, মিহিরলাল দাস ও প্রফুল্ল চন্দ্র সেন। এই সময় বিদ্যামন্দিরে প্রফুল্ল চন্দ্র সেন মুলত অঙ্ক করাতেন। এই বিদ্যামন্দির থেকেই শিক্ষক প্রফুল্ল চন্দ্র সেনের নতুন জীবনের সুচনা হলো। গান্ধীজির ডাকে সারা দিয়ে প্রফুল্ল চন্দ্র সেন তাঁর সুযোগ্য ছাত্র শিরীষ ঘোষ ও সাগর লাল হাজরাকে সঙ্গে নিয়ে আরামবাগ মহকুমায় পাড়ি দেন। স্বদেশী কাজের পাশাপাশি ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে বন্যা বিধ্বস্ত আরামবাগের বিস্তৃতন এলাকায় ত্রান বিলি করেন প্রফুল্ল চন্দ্র সেন। এই বিষয়ে আঞ্চলিক ইতিহাসবিদ তথা বিশিষ্ট সাংবাদিক দেবাশীষ শেঠ জানান, এই বিশেষ দিনে আদর্শ শিক্ষক হিসাবে আরামবাগের গান্ধী প্রফুল্ল চন্দ্র সেনের অবদান অপরিসীম। নিজের উচ্চাভিলাষ, ব্যাক্তিগত সুখ, স্বাচ্ছন্দ্যে জলাঞ্জলি দিয়ে প্রফুল্ল চন্দ্র সেন শিক্ষকতার মাধ্যমে দেশের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন।সবমিলিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা আরামবাগের গান্ধী প্রফুল্ল চন্দ্র সেন একজন শিক্ষক হিসাবে হুগলি জেলা তথা বাংলার মানুষের কাছে প্রনম্য ব্যক্তি হিসাবে চিরস্মরণীয়।