এই মুহূর্তে জেলা

গৃহপালিত পশুদের সঙ্গে নিয়েই বাড়ির ছাদে চলছে জীবন খানাকুলে।

মহেশ্বর চক্রবর্তী, ১২ আগস্ট:- হুগলি জেলার খানাকুলের বানভাসী মানুষের অসহায় অবস্থা চোখে না দেখলে উপলব্ধি করা যাবে না। ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে তারা জীবন কাটচ্ছেন বন্যা কবলিত অসহায় মানুষেরা। ধীরে ধীরে বন্যার জল কমলেও এখনও জলবন্দি কয়েক হাজার মানুষ। পাশাপাশি গৃহপালিত পশু গুলিও জলবন্দি হয়ে পড়েছে। এই সমস্ত গৃহপালিত পশুদের সঙ্গে নিয়েই বাড়ির ছাদে চলছে জীবন। বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। এ ছাড়া লোকালয়ে বন্যার জল উঠে পড়ায় গবাদিপশু রাখার সমস্যা দেখা দিয়েছে। গোয়ালঘরে জল উঠে যাওয়ায় কোনো রকমে গরু-মহিষসহ নানা পোষা প্রাণীকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির ছাদে থাকতে হচ্ছে। তাই এসব প্রাণী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী খানাকুলের বন্যা উপদ্রুত অঞ্চলগুলিতে ২০ বস্তা করে পশু খাদ্য দেওয়া হয়েছে।যা চাহিদার তুলনায় অনেকটাই কম।

প্রত্যেক সংসদে এক বস্তা করে পশু খাদ্য দেওয়া হচ্ছে। ভয়ংকর বন্যা কবলিত এলাকাগুলিতে প্রত্যেকে যদি দুই থেকে তিন কেজি করে পশু খাদ্য পায় তা আর কতদিন চলবে।উঠছে প্রশ্ন। স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে,বন্যার জলে এমনিতেই বহু গরু,ছাগল, মুরগী, হাঁস বন্যার জলে ভেসে চলে গেছে। যেগুলি বেঁচে আছে তাদের খাবার যোগাতে পারছে না বন্যা কবলিত মানুষ। খানাকুলের ঠাকুরানী চক, কিশোরপুর এক ও দুই নম্বর অঞ্চল, ধান্যনগরী, রাজহাটি, শাসবলসিংহপুর, কাকনান, জগৎপুর, চিংড়া,নতিবপুরের ক্ষয়ক্ষতি বেশি। চারিদিকে জল আর কাদার জন্য গৃহপালিত পশুর বিচরন ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে গরু, ছাগলকে বাড়ির ছাদে পরিবারের সাথে রাখতে হচ্ছে। এই বিষয়ে খানাকুলের ধান্যননগী অঞ্চলের উপপ্রধান দিলীপ সাঙ্কি জানান,আমরা কুড়ি বস্তা পশু খাদ্য পেয়েছি। প্রত্যেক সংসদে বিলি করার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে আমাদের কয়েক ঘন্টা আগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হচ্ছে উচ্চ প্রশাসন থেকে।

এত কম সময়ের মধ্যে কিভাবে কাজ করা যাবে।বন্যার জন্য প্রত্যেক গ্রাম বা সংসদের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা সম্ভব হচ্ছে না। প্রকৃত অসহায় মানুষ যাতে বাদ না পড়ে সেদিকে নজর রাখা দরকার। তাই প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবী ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট পাঠানোর জন্য একটু বেশি সময় দেওয়া হোক। অন্যদিকে খানাকুলের ঠাকুরানী চকের প্রধান শীতল মন্ডলের দাবী, চাহিদার তুলনায় পশুখাদ্য অনেক কম রয়েছে। ব্লক থেকে যা পাঠানো হয়েছে তা আমরা প্রত্যেকটি গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছি। প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে খানাকুলের বন্যা উপদ্রুত এলাকায় গবাদিপশু ও অন্যান্য প্রাণীর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রাণিসম্পদ দপ্তরগুলো কাজ করে চলেছে এবং ভেটেনারি মেডিকেল টিমও গঠন করে দেওয়া হয়েছে।সবমিলিয়ে এখন দেখার বন্যা কবলিত এলাকায় গৃহপালিত পশুদের চিকিৎসা ও পশু খাদ্যের বিষয়ে প্রশাসন আর কি কি ব্যবস্থা নেয়।