এই মুহূর্তে জেলা

মন্ত্রীর নির্দেশই সার, তৃণমূলের ওয়ার্ড অফিসের সামনেই ভরাট জলাশয়!

সুদীপ দাস, ১১ আগস্ট:- দিনকয়েক আগেই রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম পুকুর ভরাট বন্ধে কড়া পদক্ষেপের কথা বলেছেন। কিন্তু তৃণমূলের দখলে থাকা ওয়ার্ড অফিসের সামনেই সম্পূর্ন ভরাট হয়ে গেলো একটি জলাশয়। টানা কয়েক দিন কারোর নজরে না পরলেও বুধবার বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন এলাকার তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর। তবে ততক্ষনে সম্পূর্ন জলাশয় মাটির নীচে চাপা পরে গেছে। কে ওই জলাশয় কিনে ভরাট করছেন তাঁর নাম কো-অর্ডিনেটর বলতে না পারলেও পুলিশের সামনে জন প্রতিনিধির করজোড়ে আবেদন আপনারা বিষয়টা দেখুন আমি ওই জলাশয় পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেবো। বুধবার সকাল থেকে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডে মিলনপল্লী এলাকায়। ওই এলাকাতেই রয়েছে ৪নম্বর ওয়ার্ড কমিটির অফিস। সেই অফিস থেকে ১০০মিটারের মধ্যে অবাধেই একটি ছোট পুকুর সম্পূর্ণ ভরাট হয়ে গেলো।

অথচ ওয়ার্ড অফিসের কারোর নজরে পড়লো না। স্থানীয় বাসিন্দা সুকান্ত দাসের বক্তব্য কিছুদিন আগে জনৈক ভোলা নামের কোন ব্যাক্তি তাঁর কাছে এসে জানতে চায় যে তিনি পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে পুরসভাকে জানিয়েছেন কি না? কিন্তু সুকান্তবাবু তাঁকে জানিয়ে দেন তিনি এবিষয়ে কিছু জানেন না। যদিও সুকান্তবাবুর বক্তব্য পুকুর ভরাট করা তিনি কোনভাবেই সমর্থন করেন না। তবে তিনি বলেন বিগত কয়েক দিন করে রোজ সকাল ৫টা থেকে পরপর মোটর ভ্যানে করে মাটি এনে পুকুরে ফেলা হয়। বাড়িতে বাচ্চা আছে। শব্দে ঘরে থাকা যায় না। অন্যদিকে আর এক প্রতিবেশী অশোক চক্রবর্তী বলেন পুরসভা-ই ওই পুকুরে আবর্জনা ফেলছিলো। তাই দূর্গন্ধে এলাকায় টেকা দায় হয়ে যায়। তাই তিনি ওই পুকুর ভরাট করার জন্য স্থানীয় কো-অর্ডিনেটর সঞ্জয় পালকে মাসখানেক আগে চিঠি দিয়েছিলেন।

তাই তিনি ভেবেছেন সঞ্জয় পালের তত্ত্বাবধানেই পুরসভা ওই পুকুর ভরাট করছিলো। যদিও অশোকবাবুর চিঠি দেওয়ার বিষয়টি সর্বৈব মিথ্যা বলে দাবী করেন কো-অর্ডিনেটর সঞ্জয় পাল। তিনি বলেন মাসখানেক আগে একবার এখানে এসে পুকুর ভরাট করা যাবে না বলে জানিয়ে যান। কিন্তু নতুন করে পুকুর ভরাটের বিষয়ে তিনি জানেন না। কিন্তু ওয়ার্ড অফিসের পাশে পুকুর ভরাট হচ্ছে সে বিষয়ে কেউ জানলো না? এ প্রশ্নের উত্তরে সঞ্জয়বাবুর বক্তব্য স্থানীয় কেউ আমাকে কিছু জানায়নি, আর কেউ যদি রাতের অন্ধকারে পুকুর ভরাট করে তাহলে আমি কি করে জানবো! খবর পেয়ে এদিন ঘটনাস্থলে যায় চুঁচুড়া থানার পুলিশ।

ভ্যানচালকদের কাছে পুলিশ জানতে পারে তাঁদের জনৈক চন্দন দাস তাঁদেরকে পুকুরে মাটি ফেলতে বলেছে। এরপর চন্দন দাসকে ফোন করলেও ফোনে সাড়া না পেয়ে পাশেই অন্নপূর্না কলোনীতে চন্দন দাসের বাড়িতে পৌঁছয় পুলিশ। সেখানে চন্দনের দেখা পাওয়া যায়নি। পুলিশ মাটি ভর্তি দুটি মোটর ভ্যান ও দুই ভ্যান চালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। এবিষয়ে বিজেপির বক্তব্য পুরমন্ত্রীর নির্দেশ যাই হোক না কেন গোটা রাজ্যে তৃণমূল নেতৃত্বের মদতে পুকুর ভরাট চলছে। বিজেপি যুব মোর্চার হুগলী সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুরেশ সাউ বলেন চুঁচুড়ার ৪নম্বর ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরের সামনেই তো ওই পুকুর ভরাট হয়েছে। উনি আসল পান্ডা। পান্ডাকে না ধরে শুধু শুধু দু’জন ভ্যান চালককে আটক করা হলো।