এই মুহূর্তে জেলা

প্রায় ৪৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালি পুজো করোনা পরিস্থিতিতে অনারম্ভ ভাবে হওয়ায় ভক্তদের মনে বিষাদের সুর।যদিও প্রাচীন রীতি মেনে পুজোপাঠ হয়।

হুগলি, ১১জুলাই:- প্রায় ৪৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালি পুজো করোনা পরিস্থিতিতে অনারম্ভ ভাবে হওয়ায় ভক্তদের মনে বিষাদের সুর। যদিও প্রাচীন রীতি মেনে পুজোপাঠ হয়। হুগলি জেলার আরামবাগের মহেশপুর এলাকার প্রাচীন এই কালি পুজোকে কেন্দ্র করে পুর্নার্থীদের উৎসাহ বেশ চোখে পড়ার মতোন। এই বছর সম্পুর্ন ভাবে কোভিড প্রোটোকল মেনে পুজোপাঠ হয়। স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, প্রাচীন কাল থেকেই আষাঢ় মাসের নিদিষ্ট দিনের অমাবস্যার রাতে মায়ের আরাধনা হয়। আরামবাগ শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দুরেই মহেশপুর জনপদ।প্রাচীন কালে জঙ্গল দিয়ে ঘেরা জনপদের মাঝে মায়ের পুজোপাঠ শুরু হয়। হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার পুজোর সাথে যুক্তছিলেন। তারপর আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় জনপদ বেড়েছে। বর্তমনে ২৩২ টি পরিবার মহেশ্বরপুর এলাকায় বসবাস করেন। প্রত্যেক পরিবার মায়ের পুজোপাঠে সামিল হন। তাই এই জাগ্রত কালি মায়ের পুজো বারোয়ারী পুজোতে পরিনত হয়েছে।

তবে কালি মায়ের সেবাই হিসাবে মুলত সনাতন পুরকায়িত,অসিত বরন ঘোষ,প্রনব বিশ্বাস ও তারাচাঁদ ঘোষেরা যুক্ত আছেন। এই প্রাচীন ঐতিহ্য বাহি মা কালির বিশেষত্ব হলো বহু মানুষ এই মহেশপুর কালি মন্দিরে মায়ের আশীর্বাদ নিতে আসেন তাদের দৈন্দিন জীবনের সমস্যার সমাধানের জন্য। দুর দুরান্ত থেকে ভক্তরা এসে মায়ের মন্দিরের ফুল বেল পাতা নিয়ে যান।তাদের সমস্যার সমাধান হওয়ায় খুশি মনে কালি মন্দিরে পুজো দিয়ে বাড়ি ফেরেন। এই বিষয়ে সেবাই অসিত বরন ঘোষ বলেন,আমাদের এই পুজো প্রায় ৪৫০ বছরের। জাগ্রত এই মা কালির পুজোতে প্রায় ছয়শো ছাগ বলি হয়। কিন্তু এই বছর কোভিড প্রোটোকল মেনে ছাগ বলি বন্ধ আছে। রীতি মেনে মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মাত্র তিনটি ছাগ বলি হয়েছে। নিয়ম মেনে মঙ্গল ঘট উত্তোলনের মাধ্যমে পুজোপাঠ শুরু হয়।

“অপরদিকে মায়ের আশীর্বাদ নিতে আসা এক গৃহবধু জানান, সংসারের কল্যান কামনায় মা কালির কাছে প্রার্থনা ও প্রনাম করলাম। আগের মতো জাঁগজমক করে হচ্ছে না। আমরা চাই মা কালির আশীর্বাদে আবার আগের মতো সবকিছু ঠিক হয়ে যাগ। পৃথিবী করোনা মুক্ত হোক। অন্যদিকে স্থানীয় মানুষ সমর পন্ডিত জানান, আমরা ছোটবেলা থেকে মহেশপুরের এই কালিপুজো দেখছি। এ বছর সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজো পাঠ হচ্ছে। শান্তি শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে পুজো হয়। সবমিলিয়ে আরামবাগের মহেশপুর এলাকার এই প্রাচীন কালিপুজো এই বছর সম্পুর্ন কোভিড প্রোটোকল মেনে পুজোপাঠ হলেও ভক্তদের মনে হতাশ যেমন দেখা গিয়েছে তেমনি মা কালির কাছে পৃথিবীকে করোনা মুক্ত করার কাতর আবেদন ভক্তদের।