এই মুহূর্তে জেলা

বাঁধ আটকাতে গাছের বীজ , বাড়বে অক্সিজেন , পৃথিবী আবার শান্ত হবে আরামবাগে।

মহেশ্বর চক্রবর্তী, ২৭ জুন:- নদী বাঁধের ওপর গর্ত করে গুটি কয়েক যুবক ও কিশোর এলাকার মানুষের উচ্ছিষ্ট খাবারের ফেলে দেওয়া কাঁটাল থেকে শুরু করে জাম ও আমের আঁটি সংগ্রহ করে পুঁতে দিচ্ছে। প্রশ্ন করাতে পরিস্কার ভাবে উত্তর দিলো, পরিবেশে অক্সিজেন কমে যাচ্ছে তাই গাছ লাগানো খুব প্রয়োজন। তাছাড়া নদী বাঁধে গাছ কেটে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় বাঁধ ক্ষয়ে যাচ্ছে। তাই বীজ পুতেঁ দেওয়া হচ্ছে। এই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে হুগলি জেলার আরামবাগের দ্বারকেশ্বর নদী বাঁধে। জানা গিয়েছে পরিবেশকে সুস্থ ও স্বাভাবিক করে তুলতে অভিনব উদ্যোগ গ্রহন করলো গুটি কয়েক যুবক ও কিশোর আরামবাগের দৌলতপুর এলাকার বেশ কয়েক জন যুবক নদীবাঁধ এলাকায় গাছ লাগানোর জন্য পরিকল্পনা গ্রহন করে। এই জন্য তারা এলাকার মানুষের উচ্ছিষ্ট খাবারের মধ্যে ফেলে দেওয়া জাম, কাঁটাল,খেজুর ও আমের আঁটি সংগ্রহ করে। বর্ষার তিন চার মাস আগে থেকে এই আঁটি সংগ্রহের কাজ চলে।

বর্ষা আসতেই এই সমস্ত যুবক ঝুড়ি ভর্তি আঁটি নিয়ে দ্বারকেশ্বর নদী বাঁধে চলে আসে। গর্ত করে নদী বাঁধের ধারে বাধে আঁটি পুঁতে দেয়। তাদের দাবী এই বীজ থেকে প্রকৃতির বুকেই গাছ হবে। প্রকৃতি সুস্থ ও স্বাভাবিক করে তোলার পাশাপাশি অক্সিজেনের জোগান দেবে। পৃথিবী আবার করোনা মুক্ত হবে। করোনা পরিস্থিতিতে এই সমস্ত যুবকেরা পড়াশোনার পাশাপাশি গ্রামের প্রতিটি পরিবারকে ফল খাবার পর আঁটিগুলি রেখে দেওয়ার জন্য বলে। তারপর সেই গুলিকে কাজে লাগানোর জন্য এবং পরিবেশে অক্সিজেনের জোগান বাড়ানোর জন্য প্রকৃতির বুকে এই আঁটিগুলি পুঁতে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। তাদের দাবী বর্ষার সময় এই গুলি লাগালে প্রকৃতির নিয়মেই এরা গাছে পরিনত হবে। দেখাশোনা করার কোনও প্রয়োজন হবে না। তাদের কেউ বরাত দেয়নি। পরিবেশ বাঁচাতে তারা নিজেরাই এই অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করে। অথচ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলি সম্পুর্ন উদাসীন।

উল্লেখ্য দৌলতপুরের চাঁদুর ফরেস্ট দেখাশোনার অভাবে ধ্বংসের মুখে। গাছের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। হেলদোল নেই বন দপ্তরের। কিভাবে বন রক্ষা হবে সেই ব্যাপারে হুশ নেই বনদপ্তরের বলে অভিযোগ এলাকার মানুষের। অথচ ওই এলাকার কচি কাঁচারা নিজেরাই পরিবেশ বাঁচাতে গাছের বীজ পুঁতে দিচ্ছে সরকারি জায়গাতে। এই বিষয়ে প্রশান্ত দাস, গোপাল অধিকারী, অজয় দাসরা জানায়, ফল খেয়ে আঁটি ফেলে দেয়। সেগুলি নষ্ট হয়ে যায়। আমরা ওই আঁটিগুলিকে নষ্ট না করে সংগ্রহ করে সরকারি জায়গায় লাগিয়ে দিচ্ছি। নদীবাঁধ থেকে শুরু করে জঙ্গল, পিডব্লুডির জায়গা, রাস্তার ধারে বীজ পুঁতে দিচ্ছে যাতে করে পরিবেশ সুস্থ ও স্বাভাবিক হয়। করোনা মুক্ত হয় পৃথিবী। সবমিলিয়ে কচিকাঁচা তরতাজা এই যুবক ও কিশোরদের পরিবেশ বাঁচানোর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায় এলাকার মানুষ ও পরিবেশবিদদের একাংশ।