হাওড়া , ৭ জুন:- একে কার্যত লকডাউন। তার উপর জুটমিলে চলছে লকআউট। এরমধ্যেই মধ্যেও স্বস্তি, আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি নাগাদ খুলতে চলেছে বন্ধ হয়ে যাওয়া বালির মহাদেব জুটমিল। বালির তৃণমূল বিধায়ক ডাঃ রাণা চট্টোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপেই কেটেছে জট। চলতি সপ্তাহের শনিবারে ওই জুটমিলে মেইনটেনেন্স চালু হবে। এরপর বুধবার থেকে পুনরায় মিল খোলা হবে। বিধায়কের হস্তক্ষেপেই অবশেষে খুলতে চলেছে বালির মহাদেব জুটমিল। গত কুড়ি দিন আগে ১৯ মে আচমকাই লকডাউন আর কাঁচামালের জোগানের অভাব এই অজুহাতে মিল বন্ধ করে দিয়েছিলেন মিল কর্তৃপক্ষ। ফলে চূড়ান্ত অসুবিধায় পড়েন শ্রমিকরা। তাঁদের দুর্দশার কথা শুনে এগিয়ে আসেন বালির সদ্য নির্বাচিত বিধায়ক ডাঃ রাণা চট্টোপাধ্যায়। তিনি শুধু শ্রমিকদের জরুরী ভিত্তিতে খাদ্য সামগ্রীর ব্যবস্থাই করেননি, সোমবার সকালে তিনি মিলে উপস্থিত হয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন।
অবিলম্বে জুটমিল খোলার ব্যবস্থা করেন তিনি। উল্লেখ্য, গত ১৯মে লকডাউনের মধ্যেই বন্ধ হয় হাওড়ার এই জুটমিল। কাজ হারান প্রায় এক হাজার শ্রমিক। করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে লকডাউনের মধ্যেই বালি বাদামতলার মহাদেব জুটমিল সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ দিয়ে বন্ধ করা হয় এই জুটমিল। মূলত কাঁচামালের আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছিল মিল কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে এবারই প্রথম বন্ধ হল হাওড়ার বালি বাদামতলা মহাদেব জুটমিল। কর্মহীন হয়ে পড়লেন প্রায় এক হাজার শ্রমিক। সরকারি নির্দেশমতো ৩০ শতাংশ কর্মী নিয়েই এই মিলে কাজ চলছিল। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করেই মিল কর্তৃপক্ষ একতরফাভাবে মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে শ্রমিকরা অভিযোগ তুলেছিলেন। অবশেষে এই মিল পুনরায় চালু হতে চলায় খুশি মিলের শ্রমিকরা।
এদিন মিলের কর্মী সঞ্জু সামন্ত জানিয়েছেন, আজকে যা দাবি দাওয়া ছিল তা অনেকটাই মেনে নিয়েছেন মিল কর্তৃপক্ষ। ওনারা জানিয়েছেন, শনিবার থেকে মেনটেনেন্স চালু হবে। বুধবার থেকে যেমন মিল চালু ছিল তেমনই চালু হবে। দাবি ছিল কিছুটা অ্যাডভানস দেওয়ার। মিল চালু হলে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে মিল কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন। স্থানীয় বিধায়কের হস্তক্ষেপেই মিল খুলছে বলে দাবি তাঁর। বালির বিধায়ক ডাঃ রানা চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মিল খোলার ব্যাপারে মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে পাটের যে চাহিদা তা পূরণ করতে পারেননি। তবে আশ্বাস দিয়েছেন শনিবার থেকে কারখানা মেনটেনেন্স চালু হবে। মঙ্গলবার অথবা বুধবার থেকে মিল পুরোদমে চালু হবে।
তিনি আশা করছেন আগের মত এই মিল স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তিনি আবেদন করেছিলেন মিল বন্ধ হওয়ায় শ্রমিকদের যে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদের জন্য যাতে কিছু ব্যবস্থা করা হয়। মিল চালু হলে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে মিলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে, এই ব্যাপারে মিল কর্তৃপক্ষের তরফে সরোজ ঝাঁ জানিয়েছেন, কাঁচা মালের চাহিদা পূরণ হয়নি। মিলের যে পাট মজুত আছে তা দশ পনেরো দিন চলবে। বাকি পাট যোগাড় করার চেষ্টা চলছে। যাতে মিলটা চলে, শ্রমিকদের সংসার চলে সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে। শনিবার থেকে মিলের মেনটেনেন্স এর কাজ শুরু হবে। তারপরেই চালু হয়ে যাবে বন্ধ থাকা এই মিল।