এই মুহূর্তে জেলা

বাংলায় ভোট চাওয়ার আগে উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড নিয়ে মোদী, শাহদের মুখোমুখি বসার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন অভিষেক।

হাওড়া, ৫ এপ্রিল:-“কেন্দ্রে সাত বছর ক্ষমতায় এসে আপনারা ( বিজেপি ) কি কাজ করেছেন, আর বাংলায় ক্ষমতায় এসে আমরা ( তৃণমূল ) কি কাজ করেছি রিপোর্ট কার্ড নিয়ে তথ্য সামনে রেখে আসুন মুখোমুখি বসে জনগণের সামনে তুলে ধরি। একদিকে আমি থাকব। আপনারাও রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আসুন। বাংলার মানুষের কাছে তুলে ধরুন। দেখুন দশ গোল দিয়ে যদি মাঠের বাইরে না করতে পারলে রাজনীতিতে আর থাকব না।” বিজেপির সর্বভারতীয় শীর্ষ নেতৃত্বকে এইভাবেই কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি তথা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুপুরে হাওড়ার বালি এ্যাথলেটিক্স ক্লাব ময়দানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ডাঃ রাণা চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে আয়োজিত এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক বলেন, “আগামী ১০ তারিখের নির্বাচন উন্নয়নের নিরিখেই হওয়া উচিত। রিপোর্ট কার্ড নিয়ে নির্বাচন হওয়া উচিত। কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার উন্নয়নের জন্য কি করেছেন তা জনগণের সামনে আগে তুলে ধরুন।

বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আমি রিপোর্ট কার্ড নিয়ে মুখোমুখি বসতে চাই। দশ গোলে হারাব। আজ সারা দেশের অর্থনীতি রসাতলে গেছে। মমতা যা বলেছেন তাই করেছেন। মোদীজি কোনও প্রতিশ্রুতিই পালন করেননি। বিজেপি ভাঙা অডিও ক্যাসেট এখন বাজাবে। আর ভোট মিটলেই পালাবে। আমফান, করোনার সময় এই বিজেপি নেতাদের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এখন বহিরাগত নেতারা এসে বাংলার মানুষের কাছে এসে ভোট চাইছেন। দিদি যা যা বলেছেন অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। আজকে রান্নার গ্যাস, পেট্রোল, ডিজেলের দাম কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে দেখুন। মাত্র দশ শতাংশ লোককে নিয়ে ওরা আয়ুষ্মান ভারত করতে চেয়েছিল। আর মমতার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বাংলায় সবাই পেয়েছেন। কেউ বাদ যাননি। যুগান্তকারী এই কাজ ভারতেও কেউ করতে পারেননি। ভারতে নারী নির্যাতনে উত্তরপ্রদেশ এক নম্বরে। যোগীর কাছে আমাদের নারী সুরক্ষা শিখতে হবে ? এরাজ্যে মাওবাদী সমস্যা মিটে গিয়েছে। জঙ্গলমহলে মাওবাদী সমস্যা কিভাবে মেটাতে হয় তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়ে দিয়েছেন।

ভোটদাতাদের কাছে আমাদের অনুরোধ আগে কাজ দেখুন। তারপর ভোট দিন। সিদ্ধান্ত আপনাদেরই নিতে হবে। দিদির পরিষেবা আজকে বাড়ি বাড়িতে পৌঁছে গেছে। বাংলার কৃষ্টি সংস্কৃতি বিজেপি জানেনা। এদের হাতে বাংলার ক্ষমতা তুলে দেবেন না। দুর্গাপুজো, কালীপুজো, মনসা পুজো কি এদের কাছে আমাদের শিখতে হবে ? মোদীবাবুরা নির্বাচনের আগে অনেক বড়ো বড়ো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আজকে অণুবীক্ষণ দিয়ে খুঁজতে হবে কতজন মোদীবাবুদের জমানায় চাকরি পেয়েছেন। অতএব, বহিরাহতদের বিদায় দিন। তৃণমূলের আবর্জনা ওদের সম্পদ। বিশ্বাসঘাতকদের চাটার্ড ফ্লাইটে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বাংলায় একটা মহিলার কি ক্ষমতা দেখুন। দিল্লি থেকে ওরা ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করছে। আরে শুনে রাখুন মমতাকে বাংলা ছাড়া করতে গেলে আপনারা ভারত ছাড়া হয়ে যাবেন। ২৫০ এর বেশি আসন আমরা পাব। গত দু’দফার নির্বাচনে ওদের কোমর, হাত ভেঙেছে। মোদী অমিতজিরা কাদের ভাঁওতা দিচ্ছেন ? দিদি ১০টি অঙ্গীকার নিয়েছেন।

এর

মধ্যে উল্লেখ্য, তৃণমূল ক্ষমতায় এলে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড করে দেবেন বলেছেন। বাংলার ৬৮ হাজার প্রান্তিক কৃষককে দশ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। গৃহকত্রীদের প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাসে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। বিনামূল্যে রেশন বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। দুয়ারে রেশন পৌঁছে যাবে। সুতরাং আপনারা কি চান বিনামূল্যের দুয়ারে রেশন না মোদীজির দুয়ারে ভাষণ? লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিন আর তৃণমূল ক্ষমতায় এলে বাড়িতে বসে রেশন নিন। উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিন। বিশ্বাসঘাতক বহিরাগতদের বিরুদ্ধে ভোট দিন।” এদিন তৃণমূলের সভায় সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, বালি কেন্দ্রের প্রার্থী ডাঃ রাণা চট্টোপাধ্যায় সহ বালি কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।