এই মুহূর্তে জেলা

বাবার সাক্ষ্যে সাজা ছেলের।

হাওড়া, ১৬ মার্চ:- গৃহবধূ হত্যার মামলায় বাবার সাক্ষ্যে সাজা হল ছেলের। মঙ্গলবার মঙ্গলবার এই চাঞ্চল্যকর মামলার রায় দেন হাওড়া জেলা আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা জজ শর্বাণী মল্লিক চট্টোপাধ্যায়। দোষী সমীর জানাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড নির্দেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৪মে হাওড়ার পাঁচলা থানা এলাকার বাসিন্দা ভারতী জানা নামে এক গৃহবধূ তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হন। প্রায় ৯ বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল সমীর জানার সঙ্গে। তাঁদের একটি শিশুপুত্র রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে ভারতীদেবীর উপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চালাত বলে অভিযোগ ওঠে। ভারতীদেবীর পরিবার টাকা দিলেও সেই টাকা জুয়া খেলে উড়িয়ে দিত তাঁর স্বামী। পরে টাকা দিতে অস্বীকার করে মৃত গৃহবধূর পরিবার। এরপর থেকে ভারতীদেবীর উপর অত্যাচার চরমে ওঠে। ২০১৬ সালের ১৪মে মৃতার স্বামী সমীর শোবার ঘরে ঢুকে ভারতীদেবীর সঙ্গে তুমুল ঝগড়া ও অশান্তি শুরু করে।

এরপর মারধর করে গৃহবধূর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। বাড়ি থেকে আগুন দেখে এলাকার লোকেরাই খবর দেন ভারতীদেবীর বাড়িতে। এরপর তাঁর বাড়ি এবং পুলিশ প্রায় ১০০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় কুলাই হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এই ঘটনায় মৃতের দাদা সুশান্ত দাস থানায় অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ওইদিনই গ্রেফতার করা হয় সমীরকে। পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২/৪৯৮ক ধারা সহ একাধিক মামলা রুজু করে। এরপর চলে সমীরের বিচারপর্ব। বিচার চলাকালীন মোট ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এদের মধ্যে অভিযুক্তের বাবার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। প্রথমে স্বীকার না করলেও পরে তিনি স্বীকার করেন ওইদিন সকালে সমীরের ঘর থেকে ঝগড়ার আওয়াজ শোনেন। অভিযুক্ত সমীরকে ৩০২ এবং ৪৯৮ক ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক।