এই মুহূর্তে জেলা

প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হলেই হুগলি জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল মাথাচাড়া দিতে পারে।

হুগলি , ৫ মার্চ:- প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হলেই ফের হুগলি জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল মাথাচাড়া দিতে পারে। বাড়তে পারে কর্মী অসন্তোষও। এমনই মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহলের একাংশ। সূত্রের খবর, গত লোকসভা ভোটের অনেক আগে থেকেই হুগলিতে তৃণমূলের নেতাদের গোষ্ঠী কোন্দল রাজ্য নেতৃত্বকে চিন্তায় রেখেছিল। ‘স্টিয়ারিং কমিটি ‘কোর কমিটি’ করে,পর্যবেক্ষক বদল করেও সে কোন্দল থামানো যায়নি। যার নেতিবাচক ফল মিলেছিল লোকসভা নির্বাচনে। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রটি হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। হারতে হারতে কোনওক্রমে জেতে আরামবাগ আসনটি। একমাত্র মুখরক্ষা করে শ্রীরামপুর আসনটি, সেখানে ভালোভাবেই জিতে যায় তৃণমূল। যদিও শ্রীরামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে যথারীতি ২০১৪ সালের ফলের পুনরাবৃত্তি হয়, হেরে যায় দল। তৃণমূলের এই খারাপ ফলের একটা কারণ অবশ্যই সিপিএমের ভোট বিজেপিতে চলে যাওয়া। অন্য কারণটি হলো, গোষ্ঠী রাজনীতির জেরে দলীয় অন্তর্ঘাত।

এর পাশাপাশি পঞ্চায়েত, পুরস্তর থেকে ওপরতলা পর্যন্ত দলের এক শ্রেণীর খুচরো, মাঝারি ও বড় নেতাদের অনিয়ন্ত্রিত, উদ্ধত জীবনযাপনে ক্ষুব্ধ, বিরক্ত কর্মীদের অসন্তোষও একটা বড় ‘ফ্যাক্টর’ হয়েছিল। হুগলির রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে,কর্মীদের অসন্তোষ কমানো যায় নি। বরং দলের ‘মাদার’, যুব ও ছাত্র শাখার জেলা কমিটি গঠনের পর কর্মী ও একশ্রেণীর তৃণমূল নেতাদের বিরক্তি আরও বেড়েছে। তাদের অভিযোগ, কিছু অযোগ্য, দুর্বিনীত ও বিতর্কিত চরিত্রের ব্যক্তিদের এই কমিটিগুলোতে ঢোকানো হয়েছে। এরই মধ্যে প্রকাশ্যে নেতারা পরস্পরের বিরুদ্ধে মুখ খুলে জল আরও ঘোলা করেছেন। এরই মধ্যে বিধানসভা ভোটের ঠিক আগেই দলীয় বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল সহ দুএকজন নেতা গোষ্ঠী রাজনীতিতে কোনঠাসা হওয়ার অভিযোগ তুলে দল ছেড়ে দিয়েছেন। এই অবস্থায় দলের অন্দরের পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি বলে মনে করছে হুগলি জেলা তৃণমূলের নেতা ও কর্মীদের একাংশ। সূত্রের খবর, উত্তরপাড়া বিধানসভায় স্বচ্ছ ইমেজের স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে দল প্রার্থী না করলে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ মাত্রাছাড়া হবে।

শ্রীরামপুরে বিধায়ক সুদীপ্ত রায়কে ফের প্রার্থী না করলে দলকে ভুগতে হবে। চাঁপদানী বিধানসভা গতবারেই হাতছাড়া হয়েছিল তৃণমূলের। অভিযোগ উঠেছিল, অন্তর্ঘাত করেই দলীয় প্রার্থীকে হারানো হয়েছিল। এবারে আপাদমস্তক রাজনৈতিক কোনো মানুষকে চাঁপদানীতে প্রার্থী চাইছেন কর্মীরা, যাঁর গায়ে দুর্নীতি ,স্বেচ্ছাচারের দাগ নেই। সিঙ্গুরে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বয়সের কারণে টিকিট না পেলে বাইরে থেকে রাজনীতি, সংস্কৃতি, সামাজিক কাজে জড়িত কাউকে নিয়ে এসে প্রার্থী না করলে বেচারাম মান্না ভার্সেস মহাদেব দাস, মাণিক দাসের কোন্দল থামানো যাবে না। প্রসঙ্গত, এই কোন্দলের কারণেই গত লোকসভা ভোটে সিঙ্গুরে হেরেছিল তৃণমূল, এমনই মনে করেন কর্মীদের একটা বড় অংশ। এরকমই চুঁচুড়া, আদি সপ্তগ্রাম, বলাগড়, ধনিয়াখালি,আরামবাগ, খানাকুল, তারকেশ্বর, পুড়শুড়ায় প্রার্থী বাছাইয়ে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব সতর্ক না হলে হুগলিতে তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভ বিক্ষোভ সামলাতে দলকে হিমশিম খেতে হবে। সেক্ষেত্রে ‘এডভান্টেজ’ বিজেপি। কারণ, এই সব বিধানসভা আসনগুলিতেই গত লোকসভা ভোটে তৃণমূল হেরেছিল।