এই মুহূর্তে কলকাতা

কো উইন অ্যাপ বিভ্রাটের দরুণ আজ কোভিডের দ্বিতীয় পর্যায়ের টিকাকরণের শুরুতেই দেখা দিল বিপত্তি।


কলকাতা , ১ মার্চ:- কো উইন অ্যাপ বিভ্রাটের দরুণ আজ কোভিডের দ্বিতীয় পর্যায়ের টিকাকরণের শুরুতেই দেখা দিল বিপত্তি। অসংখ্য মানুষ একসঙ্গে নাম নথিভুক্ত করার জেরেই ওই অ্যাপ ক্রাশ করেছে বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর। অ্যাপ ঠিক মত কাজ না করায় বেশ কিছু হাসপাতালে টিকারণের কাজ স্থগিত রাখতে হয়। রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রককে বিষয়টি জানানো হয়েছে।বহু রাজ্য কো উইন অযাপের বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করেছে। কিন্তু সেরকম কিছুই করতে পারেনি এরাজ্যের সরকার। বয়স্ক ও অসুস্থ টিকা প্রাপকদের সেকারণেই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। উল্লেখ্য সোমবার থেকেই থেকে দেশ জুড়ে বয়স্ক এবং কোমরবিটি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের করোনার প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে রাজ্যে প্রায় ১৩৭টি কেন্দ্র থেকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এদিন ৬০ বছর বয়সের বেশি যে কোনও নাগরিকের পাশাপাশি ৪৫–৫৯ বছর বয়সি কো–মরবিড রোগীদের মধ্যে এই পর্বে টিকাকরণ প্রক্রিয়া চলে। স্রেফ সরকারি নয়, কেন্দ্রের স্বাস্থ্যকার্ডে চিকিৎসার সুবিধা মেলে এমন বেসরকারি হাসপাতালেও টিকা মিলবে। এরপর বাংলার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধাযুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তো রয়েছেই। তবে এক্ষেত্রে চিকিৎসকদের ছাড়পত্র মিললেই টিকা পাবেন কো–মরবিড রোগীরা।

এই করোনা টিকার দাম করা হয়েছে ২৫০ টাকা। সেটা অবশ্যই বেসরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে। সরকারি হাসপাতালে টিকা মিলবে বিনামূল্যেই। কো–উইন অ্যাপের মাধ্যমে সোমবার দুপুর তিনটের মধ্যে নাম নথিভুক্ত করলে তবে দিনের দিনে টিকা মিলবে। প্রথমদিন ৫০ জনের বেশি অনস্পট টিকা পাবেন না। স্বাস্থ্যদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, শুধু এই টিকাকরণ পর্ব মেটাতেই চার মাস লেগে যাবে। তার উপর রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ–সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। তাই কোনও গোলমাল বা অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য রা‌জ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় রেখে কর্মসূচি শুরু করছে কেন্দ্র।জানা গিয়েছে, কলকাতার ১৫টি সরকারি এবং ১০টি বেসরকারি হাসপাতালকে এই কর্মসূচির জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথম দফায় জেলায় ১০০টি হাসপাতাল চিহ্নিত করা হয়েছিল। যা ধাপে ধাপে বাড়বে। অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকরা হাসপাতাল নিজে থেকেই ঠিক করতে পারবেন। চিকিৎসকরা যাতে মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দিতে ফিজ না নেন, তার জন্য রাজ্য আইএমএ’র থেকে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসক সমাজের কাছে অনুরোধ রাখা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে আমরি, অ্যাপোলো, মেডিকা, বেলভিউ, পিয়ারলেস, রুবি–সহ আরও কয়েকটি হাসপাতাল টিকা দিতে শুরু করেছে। আর সরকারি হাসপাতালের মধ্যে আইজিপিএমইআর, এসএসকেএম, এনআরএস, কলকাতা মেডিকেল কলেজ, আর জি কর, ক্যালকাটা ন্যাশানাল মেডিকেল কলেজ, এম আর বাঙুর, বিদ্যাসাগর হাসপাতাল, গার্ডেনরিচ হাসপাতাল, ইএসআই হাসপাতাল,আইডি হাসপাতাল,

লেডি ডাফরিন ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল, ডাঃ বি সি রায় হাসপাতাল, শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল, চিত্তরঞ্জন সেবা সদন এবং ট্রপিক্যাল মেডিসিন। স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, ‘কো-উইন ২.০’ অ্যাপে নামধাম নথিবদ্ধ করানোর সময় সচিত্র পরিচয়পত্রের নম্বর লাগবে। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো নথি দিলেও চলবে। নামঠিকানা-সহ ওই অ্যাপে টিকাকরণ ‘নিশ্চিত’ হয়েছে দেখালে সেখানেই টিকাকেন্দ্রের নাম ও সময় উল্লেখ করা থাকবে। তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই নথির প্রতিলিপি এবং সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে ওই কেন্দ্রে যেতে হবে। সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৩ টে পর্যন্ত টিকা নেওয়ার ‘স্লট’ খোলা থাকবে। উপভোক্তারা দেখতে পাবেন কোথায়, কোন কোন সময়ে টিকা নেওয়ার জায়গা ফাঁকা রয়েছে। যাঁদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। অ্যাপের নির্দিষ্ট জায়গায় বিষয়টি উল্লেখ করতে হবে। টিকাকরণের সময় প্রয়োজনীয় ‘মেডিক্যাল সার্টিফিকেট’ নিতে যেতে হবে। নিজের পছন্দমতো রাজ্য বেছে নেওয়া যাবে টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে। প্রথম ডোজ পাওয়ার পর ওই টিকাকরণ কেন্দ্রেই দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। কেউ প্রথম ডোজ দেওয়ার পর যদি অন্য শহরে চলে যান, তা হলে টিকাকরণ কেন্দ্র পালটানোর সুযোগ থাকবে। ২৮ দিন পর তাদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার কথা।