বাঁকুড়া , ৬ ফেব্রুয়ারি:- দশ বছর তৃণমূল ও সাত বছর বিজেপি মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে। শুধু এখানকার মাল ওখানে ও এখানকার মাল ওখানে। শোরুম দু’টো আলাদা, কিন্তু গুদামটা কালীঘাটে। তাই আমাদের গুদাম ও শোরুম দু’টোকেই দেখতে হবে’। শনিবার বাঁকুড়ার সোনামুখী বি.জে হাই স্কুলে দলীয় এক কর্মীসভায় কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দলকে ঠিক এই ভাষাতেই বিঁধলেন সিপিআইএম পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম। একই সঙ্গে এদিন বর্তমান পরিস্থিতিতে উপস্থিত দলীয় কর্মীদের’নিজের পায়ে দাঁড়ানো’ ও মিছিলে হাঁটার পরামর্শ দেন। মহম্মদ সেলিম এদিন বিখ্যাত সিনেমা ‘শোলে’র উদাহরণ টেনে বলেন, তৃণমূল ও বিজেপি একই মুদ্রার এপিঠ ও ওপিঠ। কোন পার্থক্য নেই। একই সঙ্গে ঐ দুই দল ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
দিল্লীর সরকার যদি এতোটাই কৃষক দরদী তাহলে কেন রাস্তা কেটে, রাস্তার পেরক পুঁতে আন্দোলনকারীদের দমানোর চেষ্টা হচ্ছে? এনিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলেন এই বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা। তবে হাতেগোনা কয়েকটি দলীয় কর্মী নিয়েই আজকের এই কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। 2016 বিধানসভা নির্বাচনে সোনামুখী বিধানসভায় সিপিএম জয়লাভ করলেও পরবর্তী সময়ে সিপিআইএমের জনসমর্থন ক্রমেই কমতে থাকে আজকের কর্মী সভায় কর্মীদের উপস্থিতি তাই প্রমান করল। পাশাপাশি সোনামুখী বিজে হাই স্কুলের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভে সামিল হন সিপিআইএম কর্মীরা। আর সেই সময়ে এক পথচারীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় তারা জড়িয়ে যান আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে সিপিআইএম কর্মী-সমর্থকদের নৈতিকতা নিয়ে। পথ অবরোধের জেরে রাস্তার ধারে পথচলতি যানবাহন লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে পরে সমস্যায় পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জেপি নাড্ডার কৃষকদের সাথে মধ্যাহ্নভোজন প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘এসব তো নাটক’। চ্যাটার্ড বিমানে উড়ে এসে, ফাইভ স্টার হোটেলে থেকে এসে আদিবাসী বাড়িতে কলা পাতায় বাসমতী চালের ভাত সহ লব্যচষ্য খাওয়ার নাটক চলছে। তারা কোন দিন খোঁজ নিয়েছে আদিবাসী পরিযায়ী শ্রমিকের কিভাবে দিন চলে। ওরা খাওয়াটাই বোঝে। দেশটা খেয়েছে, এবার আদিবাসী তপশীল বাড়িতে খাচ্ছে। বামপন্থীদের সঙ্গে ঐসব দক্ষিণপন্থী দলের মতের পার্থক্য নয়, কাজের পার্থক্য আছে থাকবে বলে তিনি জানান। এদিনের সভায় মহম্মদ সেলিম ছাড়াও দলের পলিটব্যুরোর সদস্য অমিয় পাত্র, জেলা সম্পাদক অজিত পতি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।