এই মুহূর্তে কলকাতা

নির্বাচনের পরেই বসতে চলেছে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার আসর।

কলকাতা , ৪ ফেব্রুয়ারি:- নির্বাচনের পরেই বসতে চলেছে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার আসর। জুলাই মাসে হবে এই মেলা। কোভিডের কারণে চলতি বছরের কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। পরিবর্তে এবার গিল্ড জানালো মেলা হবে জুলাইয়ে সল্টলেকে সেন্ট্রাল পার্কে। সেখানে থিম কান্ট্রি হবে পূর্বপরিকল্পনা মতো বাংলাদেশই। একই সঙ্গে নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী ও সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষও উদযাপিত হবে বইমেলায়। কিন্তু গিল্ডের এই সিদ্ধান্তে চূড়ান্তভাবে ক্ষুব্ধ প্রকাশকেরা। ভরা বর্ষাতে কতজন মানুষ বইমেলা দেখতে আসবেন তা নিয়ে একদিকে যেমন তাঁরা সন্দিহান রয়েছেন তেমনি সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে বইমেলার আয়োজন নিয়েও তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। কারনে ২০২০ সালের বইমেলাও এই পার্কেই হয়েছিল। আর সেই সময় সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠে যেভাবে জল জমে গিয়েছিল তা ভেবে ভরা বর্ষায় বইমেলার আয়োজন নিয়ে তাঁরা এখন রীতিমত ক্ষুব্ধ।

ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন, জেনিভা প্রকাশিত বইমেলা ক্যালেন্ডার অনুসারে ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ২০২১-এর ২৭ জানুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত ডিসেম্বরেই গিল্ডের তরফে জানানো হয়েছিল, করোনা পরিস্থিতিতে কিছু সময়ের জন্য তারা বইমেলা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। বলা হয়েছিল, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বইমেলার পরিবর্তিত দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে। এদিন গিল্ডের তরফে রীতিমত সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হয়, এখন কোভিড পরিস্থিতি অনেকখানি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তাই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা আগামী জুলাই মাসে আয়োজিত হবে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে। পূর্ব পরিকল্পনামাফিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন করতে এবার বইমেলার থিম কান্ট্রি হবে বাংলাদেশ। কলকাতা বইমেলাতেই প্রথম পালিত হবে অমর একুশে ভাষা উৎসব। তবে এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে বইমেলার দিনক্ষন ঘোষণা করা হয়নি। গিল্ডের দাবি, জুলাই মাসে বইমেলার আয়োজনে খুশি প্রকাশকেরা। যদিও পর্দার পিছনে ছবিটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভরা বর্ষায় কার্যত কলকাতা বইমেলার মতো বড় মেলার আয়োজন করার মতো কোনও পরিকাঠামো না থাকা সেন্ট্রাল পার্কে স্থান নির্বাচন নিয়েই ক্ষুব্ধ প্রকাশকেরা।

প্রকাশকদের দাবি, জুলাই মাসে এ রাজ্যে বর্ষা চলে। সেই সময়ে বইমেলা হলে বইপ্রেমীরা অসুবিধায় পড়তে পারেন। প্রকাশকেরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবেন বৃষ্টিতে তাঁদের বই ভিজে নষ্ট হয়ে গেলে। যদিও গিল্ড জানিয়েছে, জুলাই মাসে আয়োজন না করলে মেলা আর এই বছর আয়োজন করাই যাবে না। কারন একদিকে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন যেমন আসন্ন, তেমনি সেই ভোট মিটলেই পুরভোটের দামামা বেজে উঠতে পারে। আবার আইসিএসসি, সিবিএসসি বোর্ডের পরীক্ষা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাও রয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ। কিন্তু জুলাই মাস নাগাদ তা চালু হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিদেশি প্রকাশনা সংস্থা এবং অতিথিদের আসার ব্যাপারে তাই তখন সদার্থক পদক্ষেপ ঘটবে। তাছাড়া বিগত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে বর্ষার মূল সময় ততটা বৃষ্টি হচ্ছে না, বরং বেশি বৃষ্টি হচ্ছে পুজোর মুখে বা বর্ষার শেষ দিকে। তাই জুলাই মাসেই বইমেলার আয়োজন করা হবে। এদিন গিল্ড আরও জানিয়েছে, ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় অংশগ্রহণের জন্য ইচ্ছুক প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতঅদের কাছ থেকে এবং লিট্‌ল ম্যাগাজিন স্টলের জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়া হবে আগামী ১ মার্চ থেকে।