এই মুহূর্তে কলকাতা

কেন্দ্রের গাইডলাইন উড়িয়ে সিনেমা হলে ১০০ শতাং দর্শক প্রবেশের অনুমতি মমতার

কলকাতা , ৮ জানুয়ারি:- কেন্দ্রের জারি করা আনলক নির্দেশিকা অগ্রাহ্য করে সিনেমা হলে একশ শতাংশ দর্শক ঢোকার অনুমতি দিয়ে দিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার নবান্ন থেকে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সূচনা অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্যে থেকেই পরিবর্তীত নির্দেশিকা কার্যকর হবে। তবে দর্শকদের সবাইকে আবশ্যিকভাবে মাস্ক স্যানিটাইজার ব্যবহারের মতো কোভিড বিধি মানতে হবে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। এখনও পর্যন্ত জারি থাকা মহামারী আইন অনুয়ায়ী কেন্দ্রের জারি করা বিধি নিষেধ রাজ্য সরকার এক তরফা শিথিল করতে পারে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। করোনা আবহে সিনেমা হলে আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি দর্শককে প্রেক্ষাগৃহে ঢোকবার অনুমতি দেয়নি কেন্দ্র। মাত্র ৫০ শতাংশ দর্শক আসন নিয়ে হল চালানো মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে হল মালিকদের। এই মর্মে গত মঙ্গলবারই কলকাতার সিঙ্গল স্ক্রিন থিয়েটারের মালিকরা দিদির স্মরণাপন্ন হয়েছিলেন। আর ছবি উত্সবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সকলকে চমকে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিনেমা হলে ১০০% আসন ক্ষমতার অনুমোদন দিলেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী নবান্নের সভাঘর থেকে ঘোষণা করলেন-‘প্যানডেমিক পরিস্থিতির জন্য, ৫০% দর্শক হলে ঢোকার নিয়ম রয়েছে, তবে এটা হয়ে গেলে আমি মুখ্য সচিব আলাপন (বন্দ্যোপাধ্যায়)-কে বলে দিচ্ছি একটা বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিতে যাতে ১০০শতাংশ আসনেই দর্শক বসানো যায়।’উল্লেখ্য, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হেঁটে গত সোমবার তামিলনাড়ু সরকার হলে ১০০% দর্শক উপস্থিতির অনুমোদন দিয়েছিলেন।

এরপর বুধবার কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্রমন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়ে দেয় এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে তামিলনাড়ু সরকারকে। বিবৃতি জারি করে মন্ত্রক জানায়,’ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট আইনের আওতায় ঘোষিত কেন্দ্রের কোনও নির্দেশিকা লঙ্ঘন করতে পারবে না রাজ্য কিংবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল’, এই মর্মে গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যে নির্দেশিকা জারি করেছে সেটি মেনে চলতে হবে তামিলনাড়ু সরকার সহ দেশের সমস্ত রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে। কিন্তু এর কয়েকঘন্টার মধ্যেই উলটো সুর মমতার গলায়। করোনা আবহে দীর্ঘ সাত মাস তালাবন্ধ থাকবার পর গত ১৫ অক্টোবর থেকে তালা খুলেছে সিনেমা হলের। তবে অতিমারীর কারণে একাধিক বিধিনিষেধ জারি রয়েছে প্রেক্ষাগৃহে, যার মধ্যে অন্যতম সিনেমা হলের আসন সংখ্যা এখন ৫০% নামিয়ে আনা হয়েছে। অর্থাত্ ক্ষমতার মাত্র ৫০% টিকিটই বিক্রি করতে পারবেন হল মালিকরা, যাতে সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা যায়। এর জেরে টিকিটের দাম বাড়িয়েও সুবিধা করতে পারছেন না মাল্টিপ্লেক্স বা সিঙ্গল স্ক্রিন থিয়েটারের মালিকরা। বেশ কিছু থিয়েটারের ঝাঁপ ইতিমধ্যেই বন্ধ করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা হল মালিকদের কাছে সাময়িক স্বস্তির বার্তা হলেও কেন্দ্র এরপর কী পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখবার।