এই মুহূর্তে কলকাতা

দীপাবলির আগেই কি চালু হবে শহরতলীর লোকাল , নবান্নের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে গোটা রাজ্য।

কলকাতা , ১ নভেম্বর:- আনলক পর্বে ক্রমশ স্বাভাবিকতায় ফিরছে জনজীবন। একে একে বাস মেট্রো থেকে শুরু করে চালু হয়েছে সমস্ত রকম গণ পরিবহণ। কিন্তু এখনও বন্ধ রাজধানীর সঙ্গে শহরতলীর যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম লোকাল ট্রেন। শুধু মাত্র রেলের নিজস্ব কর্মচারীদের জন্য হাওড়া শিয়ালদার বিভিন্ন শাখায় কিছু ট্রেন চলাচল করছে। আর তাতে মরিয়া হয়ে সওয়ার হতে চেষ্টা করছেন সাধারণ যাত্রীরা। এই নিয়ে বিগত কয়েকদিন ধরে অশান্তির নানা ঘটনার স্বাক্ষী থেকেছেন রাজ্যের মানুষ।তবে লোকাল ট্রেনে নিয়ে অশান্তির সব থেকে বড় ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল হাওড়া স্টেশনে। আর ওই ঘটনার জেরেই পরিস্থিতির মোড় ঘোরার ইঙ্গিত মিলেছে।

অবশেষে কোভিড বিধি মেনে লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু করার ব্যপারে রেলের সঙ্গে আলোচনার দরজা খুলে দিয়েছে রাজ্য সরকার। আগামীকাল নবান্নে প্রস্তাবিত সেই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে নতুন করে আশায় বুক বাঁধছেন শহরতকলীর অসংখ্য ট্রেন যাত্রী।রেলের তরফে আগেই একাধিকবার রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে তারা আলোচনায় প্রস্তুত। রাজ্য সরকার চাইলেই আলোচনায় বসে লোকাল ট্রেন চালানোর রূপরেখা স্থির করা হতে পারে। কিন্তু অভিয়োগ তখন সাড়া মেলেনি নবান্নের তরফে। যদিও গতকাল হাওড়া স্টেশনের ঘটনার জন্য পরোক্ষে রেলকেই দায়ী করেছে রাজ্য। এই চাপান উতোরের মধ্যেই লোকাল ট্রেন চালু করা নিয়ে বৈঠক নবান্নে। তবে কী দীপাবলির আগেই চাকা গড়াবে লোকাল ট্রেনের? সেই প্রশ্নের উত্তোর পেতে উদগ্রীব আম জনতা।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামীকাল বিকাল ৫টায় রেল ও রাজ্যের বৈঠক বসতে চলেছে। রাজ্যের তরফে বৈঠকে পৌরহিত্য করবেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দোপাধ্যায়। রেলের তরফে বৈঠকে হাজির থাকবেন থাকবেন পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেলের আধিকারিকরা। বৈঠকে লোকাল ট্রেন নিয়ে জট কাটতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে রেলের তরফেও। বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা, দুই রেলের এজিএম, চিফ অপারেশন ম্যানেজার, চিফ সিকিউরিটি কমিশনার সহ রেল আধিকারিকদের। অপরদিকে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরাও এই বৈঠকে থাকতে পারেন। সূত্রের খবর, মুম্বইয়ের ধাঁচে শুধু জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা, নাকি সব যাত্রীরা লোকাল ট্রেনে উঠতে পারবেন মূলত তা নিয়েই আলোচনা হবে। একই সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে। কত সংখ্যক ট্রেন চালানো হবে তাও আলোচনায় উঠে আসবে। রেল সূত্রে খবর, তারা যাবতীয় প্রস্তুতি সেরেই বৈঠকে যোগ দেবে।

তবে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হবে সকালে ও বিকালে কিছু বাড়তি লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য যেখানে আমজনতা চড়তে পারবে। কারন জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা বাদেও রাজ্যের একটা বড় অংশের মানুষ লোকাল ট্রেনের ওপর চূড়ান্ত ভাবে নির্ভরশীল। হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ এখন কার্যত লোকাল ট্রেনে চাপতেই পারছেন না। আর চাপতে না পারার দরুন তাঁরা কর্মস্থলে যেতেও পারছেন না। ফলে চূড়ান্ত আর্থিক অনিশ্চয়তা ও দৈন্যদশায় তাঁদের জীবন কাটছে। এই রকম অবস্থায় শুধুমাত্র রেলকর্মী ও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষের লোকাল ট্রেনে চাপার ছাড়পত্র দিলে আমজনতার সমস্যার কোনও সমাধান হবে না। আমজনতা যাতে মেট্রোর মত লোকাল ট্রেনে চড়তে পারেন রাজ্যে এখন সেটাই নিশ্চিত করতে চাইছে।