এই মুহূর্তে জেলা

জমিদারী চলে যাওয়ার সাথে সাথেই জৌলুস হারিয়েছে সারেঙ্গার ধবনি গ্রামের পাল জমিদার বাড়িতে।

বাঁকুড়া , ২২ অক্টোবর:- বদলেছে সময়, বদলেছে পরিস্থিতি। এখন আর ঝাড়বাতি জ্বলেনা দালানে, বসেনা জলসার আসর। জমিদারী চলে যাওয়ার সাথে সাথেই জৌলুস হারিয়েছে সারেঙ্গার ধবনি গ্রামের পাল জমিদার বাড়িতে। তবে পূজোর জৌলুস কমলেও আজো ভক্তি শ্রদ্ধা ভরে পাল জমিদার বাড়িতে পূজিত হন মা দূর্গা। স্থানীয় নদী থেকে ঘট এনে হয় পূজোর সূচনা, নিয়ম নিষ্ঠা ভরে চলে পূজো। এই সময়টাতেই সমবেত আত্মীয় স্বজন এবং পাল পরিবারের সদস্যরা। ১৮৪১ খ্রীস্টাব্দে ধবনী পাল জমিদার স্বরুপ চন্দ্র পালের স্ত্রী শ্যামা সুন্দরী স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পূজোর সূচনা করেন।

জমিদার স্বরুপ চন্দ্র পালের আদি বাড়ি ছিল বর্তমান বিষ্ণুপুরের গোঁসাইপুর গ্রামে। তিনি রাইপুরের রাজ বাড়িতে কাজ করতেন এবং রাজার বিশ্বাস ভাজন হওয়ায় তদানিন্তন রাজা তাঁর রাজত্বের বেশ কিছুটা এলাকা ছেড়ে স্বরুপ চন্দ্র পালকে। তিনি জমিদারীর পত্তন করেন। শোনা যায় এলাকায় বেশ দাপট ছিল পাল জমিদার দের। সেই জমিদারের স্ত্রী শ্যামা সুন্দরী স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পূজোর সূচনা করেন। তৈরী হয় মন্দির, আটচালা। পূজোর সময় আটচালায়, মন্দিরে জ্বলতো ঝাড় লন্ঠন, বসতো জলসা, আসতো কলিকাতার বিখ্যাত যাত্রার দল। ধুমধাম আর হই হুল্লোড় পড়ে যেত এলাকায়।

তবে সেসব যেন আজ অতীত। জমিদার বাড়ির নোনা ধরা দালান প্রায় ধ্বংসের মুখে, আগাছা দখল করেছে পুরানো দালান ঘর, ঝাড় বাতিতে পড়েছে মরচে। তবে তাতে কি, ভক্তি শ্রদ্ধায় এত টুকুও টান পাড়েনি জমিদার বাড়িতে। কষ্টের মধ্যেই এই কটা মাতৃ আরাধনায় মন দেন পরিবারের সদস্যরা। বৈষ্ণব মতে এখানে হয় পূজো। প্রতি বছর না হলেও মাঝে মাঝে এলাকার যাত্রা শিল্পীদের যাত্রা পালাও পরিবেশিত হল বাড়ির সদস্যদের উদ্দ্যোগে। প্রাচীন ঐতিহ্যকে আজো বাঁচিয়ে রাখতে চান পাল বাড়ির সদস্যরা।