কলকাতা , ২৮ সেপ্টেম্বর:- মহামারীর আবহে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করে পুজোর আয়োজন করতে বিভিন্ন বিধি নিষেধের কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যপাধ্যায় । দিন কয়েক আগে নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বারোয়ারী পুজোর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মৌখিক ভাবে যেসব বিধি নিষেধ ও পরামর্শ দিয়েছিলেন তার সঙ্গে সঙ্গতী রেখে সোমবার বিস্তারিত ভাবে বারোয়ারী পুজোর গাইডলাইন প্রকাশ করল নবান্ন।মুখ্যমন্ত্রীর সব ঘোষণা, নির্দেশ ও প্রস্তাবকেই সরকারি ভাবে গাইডলাইন হিসাবে প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে মোট ১ দফা সতর্কতা ও বিধি নিষেধ তুলে ধরা হয়েছে।পুজো আয়োজকরা এবছর কী কী করতে পারবেন কী নয় তা বিস্তারিত ভাবে বলে দেওয়া হয়েছে সেখানে।
গত ২৪ তারিখ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজোর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বেশ কিছু প্রস্তাব, নির্দেশিকা ও ঘোষণা করেছিলেন বা দিয়েছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিল খোলামেলা মণ্ডপ নির্মাণ করার পাশাপাশি একাধিক প্রবেশ ও প্রস্থান গেট রাখা। সেই প্রস্তাব ঠাঁই পেয়েছে রাজ্য সরকারের গাইডলাইনে। রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর আবশ্যিক মাস্ক ব্যবহার ও বিনামূল্যে স্যানিটাইজার দেওয়ার প্রস্তাবও। গাইডলাইনে রয়েছে স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি তাঁদের ফেস শিল্ড, মাস্ক, স্যানিটাইজার দেওয়ার ব্যবস্থাও। এগুলি ক্লাবকে দিতে হবে। সেই সঙ্গে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, সিঁদুর খেলা দফায় দফায় করা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথাও বলা হয়েছে। বিশেষ ভাবে বলে দেওয়া হয়েছে পুরস্কার কর্তারা এবার যে ভার্চুয়ালি ভাবেই বিচারকার্য সম্পাদন করেন। শারীরিক ভাবে আসতে হলে মাত্র ২টি গাড়ি নিয়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত এসে যেন তাঁরা তা দেখে যান।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী যে সব ছাড় পুজো কমিটিগুলিকে দিয়েছেন সেই সব বিষয়গুলি। যেমন প্রত্যেক পুজোকমিটিকে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান, পুরসভা বা পুরনিগম বা পঞ্চায়েতে কোনও কর না নেওয়া, বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ছাড় ও দমকলের কোনও ফি না নেওয়ার বিষয়টিও। উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে পুজো মণ্ডপের ভিতরে বা বাইরে কিংবা পাশেই কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন না করতে। বিসর্জনের ক্ষেত্রেও যত কম সংখ্যক লোক ও যতটা সম্ভব সাধাসিধে ভাবে করার কথা বলে হয়েছে। উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে তৃতীয়া থেকেই দর্শনার্থীরা যাতে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন সেই বিষয়টিও।
যে সার্কুলার প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে সরকারের তরফে পুজো উদ্যোক্তাদের যে সব ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তারও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, সরকার কোনও কর নেবে না। পুরসভা বা পঞ্চায়েতও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ফ্রি সার্ভিস দেবে পুজো কমিটিগুলিকে। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে সরকার ৫০ শতাংশ খরচ মকুব করবে। এবং করোনার বিপর্যস্ত সময়ের কথা মনে রেখে প্রতিটি পুজো কমিটিকে সরকার এককালীন ৫০ হাজার টাকা অনুদান দিচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশও পুজো ক্লাব, কমিটিদের যথা সম্ভব সহায়তা করবে।