হাওড়া,১২ মে:- লকডাউনের ৪৯ দিনে মঙ্গলবার বিকালে যাত্রিবাহী ট্রেন হাওড়া থেকে নয়াদিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিল। গত ২২ মার্চের পর এই প্রথম কোনও যাত্রীবাহী ট্রেন হাওড়ায় থেকে চলাচল করল। করোনা বিধি মেনে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে এই ট্রেন চলাচল নিয়ে প্রথম থেকেই রাজ্য ও রেল সবরকমের প্রস্তুতি নিয়েছিল। আজ ১২মে হাওড়া থেকে প্রথম ট্রেন গেল দিল্লির উদ্দেশ্যে। এরপর একইভাবে ১৩মে হাওড়ামুখী ট্রেন চলবে দিল্লি থেকে। উল্লেখ্য, ওই ট্রেনের সব কোচ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। ট্রেনের ভাড়া ধার্য্য হয়েছে রাজধানী এক্সপ্রেসের সমতুল। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এসি থ্রি-টিয়ারে কোচ এবং এসি টু-টিয়ারে সীমিত যাত্রীদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এবং স্টপেজও থাকছে হাতে গোনা। ট্রেন ছাড়ার অনেক আগে এদিন সকাল থেকেই গোটা হাওড়া স্টেশন স্যানিটাইজ করা হয়। প্ল্যাটফর্ম থেকে শুরু করে গোটা ট্রেন স্যানিটাইজ করা হয়। যে ১,০২৮ জন যাত্রী এদিন ওই ট্রেনে গেলেন তাদের জন্য থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় ঘন্টা তিনেক আগে থেকেই ট্রেন ধরতে যাত্রীরা স্টেশনে হাজির হন। প্রত্যেক যাত্রীর ক্ষেত্রে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। ট্রেনে ওঠার অনেক আগেই তাদের হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয়। ই-টিকিট পরীক্ষা করে দেখা হয়। সোস্যাল ডিসট্যান্স বজায় রেখেই যাত্রীরা গাড়িতে ওঠেন।
সচেতন করতে মাইকিং করা হয়। এদিন থেকে ট্রেন পরিষেবা চালু হওয়ায় অনেকেই এদিন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন। এদের মধ্যে কেউ নিজের বাড়িতে ফিরছেন। কেউ বা যাচ্ছেন কর্মস্থলে। লকডাউনে দীর্ঘদিন এরা আটকে ছিলেন। এদিন প্রথম ট্রেন ছাড়ার আগে হাওড়া স্টেশনে পুরো কাজ তদারকি করতে হাজির ছিলেন ডিআরএম ঈশাক খান। ছিলেন আরপিএফের আধিকারিক থেকে শুরু করে পূর্ব রেলের আধিকারিকরাও। এক যাত্রী বলেন, “কাজে এসে লকডাউনের কারণে এখানে আটকে পড়েছিলাম। আজ ফিরতে পারছি। ভালো লাগছে।” আরেক মহিলা যাত্রী বলেন, “আমার কাকা মারা গিয়েছেন। সেই খবর পেয়ে এখানে আত্মীয়ের বাড়িতে এসে লকডাউনে আটকে পড়েছিলাম। দিল্লিতে স্বামী, সন্তানের কাছে ফিরে যাচ্ছি।” উল্লেখ্য, আজ মঙ্গলবার থেকেই আংশিক রেল পরিষেবা শুরু হয়ে গেল। দিল্লি থেকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি শহরের মধ্যে এই ট্রেন চালাচ্ছে রেল৷ এই ট্রেনগুলির টিকিট শুধুমাত্র আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইট থেকেই কাটা যাচ্ছে। আপাতত নয়াদিল্লি থেকে ১৫ জোড়া ট্রেন চলবে। নয়াদিল্লি থেকে ট্রেন চলবে হাওড়া, পাটনা, রাঁচি, আগরতলা, ভুবনেশ্বর, চেন্নাই, ডিব্রুগড়, মুম্বই সেন্ট্রাল, বেঙ্গালুরু, আহমেদাবাদ সহ আরও কয়েকটি প্রধান শহরে।