এই মুহূর্তে জেলা

নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর ঘর থেকেই লকডাউনের ত্রাণ , অবাক কান্ড চুঁচুড়ায়।

সুদীপ দাস,২৩ এপ্রিল:- করোনা আতঙ্কে বেশকিছু বাবুদের বাড়িতে ঢোকা বন্ধ হয়েছে। হাতেগোনা কয়েকজন বাবুদের বাড়িতে এখনও থালা-বাসন মেজে কোনমতে চলছে সংসার। লকডাউনের দাপটে স্বামীরাও আজ কাজ হারা। ভোররাতে ঘুম থেকে উঠে বাবুদের বাড়িতে গিয়ে শুরু হয় বাসন মাজা, জামাকাপড় কাঁচা। সবকিছু বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ঘড়ে আসতে-আসতে বেলা হয়ে যায়। তারপর নিজের বাড়ির উঁনুনে হাঁড়ি চড়ে। এখন যে স্বামীও ঘরে উঠে বসেছে। তবে তাতে কি! নিজের সামান্য রোজগারেই স্বামী সন্তানদের মুখে ভাত তুলে দেওয়ার পাশাপাশি এলাকার হতদরিদ্রদেরও এখন অন্নদাতা হয়ে উঠেছেন চুঁচুড়া কনকশালীর দুই বোন টুম্পা ও মীরা। টুম্পা দাসের স্বামী রবি দাস পেশায় ভ্যান চালক আর মীরা মালের স্বামী পেশায় জোগারে। লকডাউনের বাজারে দু’জনেই কাজ হারা। দু’জনের সংসারেরই বর্তমানে হাল ধরেছেন দুইবোন।

There is no slider selected or the slider was deleted.

                                                                                                                                                                                                                                 লকডাউনের বাজারে যখন মানুষ খাবার জোগার করে রাখতে ব্যাস্ত, তখন হতদরিদ্র এই দুই বোন নিজেদের সংসার সামলে তাঁদের থেকেও দরিদ্র মানুষদের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন। টুম্পা ও মীরার বক্তব্য লকডাউনে সকলের পাশাপাশি আমাদের অবস্থাও খারাপ। তবে আমাদের সংসার ছোট। আমরা রাজ্য সরকারের দেওয়া রেশনের পাশাপাশি এই পরিস্থিতিতে বাবুদের বাড়ি থেকেও কিছু খাদ্য সমাগ্রী পাচ্ছি। আবার কাজে যাওয়ার পথে এখানে সেখানে কিছু ক্লাব সংগঠন আমাদের দিকে খাদ্যসামগ্রী ভর্তি প্যাকেট এগিয়ে দিচ্ছেন। তাতে আমাদের ডাল-ভাত জুটে যাওয়ার পরও কিছুটা বর্ধিত থেকে যাচ্ছে। সেটা আমাদের এলাকায় যারা কিছুই পাচ্ছে না তাঁদেরকে আমরা দিয়ে দিচ্ছি। আমরা চাই সকলেই কমবেশী খেয়ে বাঁচুক। উপরওয়ালার প্রতি আমাদের বিশ্বাস আমাদের হাঁড়ি একেবারে শূন্য হবে না।

There is no slider selected or the slider was deleted.

                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                       তাই প্রায় প্রতিদিন বর্ধিত খাদ্যসামগ্রী ভর্তি ব্যাগ নিয়ে দুই বোন বেড়িয়ে পড়ছেন অন্যদের মুখে হাসি ফোটাতে। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে নিজেদের ব্যাগ থেকে চাল, আলু বাটিতে করে ঢেলে দিচ্ছেন অন্যের ব্যাগে। চুঁচুড়া কনকশালীর ছবিতা মন্ডলের বাড়িতে পরিচারিকা হিসাবে কাজ করেন মীরা মাল। সেই ছবিতা দেবী বলেন এ যেন ভিখারির ভিক্ষা দান! ওঁরা সত্যিই অনেক বড় মাপের মানুষ। বেঁচে থাকুক মীরা-টুম্পারা!বেঁচে থাকুক মানবিকতা-মানসিকতা! করোনা মোকাবিলায় কিছু করতে পারুক বা নাই পারুক, ইচ্ছা থাকলে লকডাউন মোকাবিলায় যে অনেক কিছুই করা যায়, নিজে ছোট হয়েও সমাজকে অনেক বড় বার্তা দেওয়া যায়! প্রতিদিন অন্যের ব্যাগ ভরে তাই প্রমান করছেন মীরা-টুম্পারা !!

There is no slider selected or the slider was deleted.